মৌলভীবাজার জেলার চা শিল্পাঞ্চলসহ সারাদেশের চা-বাগানে চলছে প্রুনিং। ফলে চা বাগানে সেই সবুজের সমারোহ এখন আর নেই। আগামী ২-৩ মাস এমন থাকবে। মার্চে বৃস্টি হলে আবার ফিরে আসবে প্রাণচাঞ্চল্য। ফিরে আসবে সবুজের সমারোহ।
শ্রীমঙ্গলে অবস্হিত বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আলী জানান, প্রতি বছরই নিয়মানুযায়ী ডিসেম্বরে চা উৎপাদন মৌসুম শেষে লাইট প্রুনিং বা চা গাছের মাথা ছাটাই শুরু হয় এবং মধ্য জানুয়ারির মধ্যে 'ডিপ স্কিপ' করে দিতে হয়। তখন চা বাগানের সেই সবুজের সমারোহ আর থাকে না।
প্রুনিং করা চা-বাগান গুলো এখন সবুজহীন। পাতাবিহীন ধুসর বর্ণের খাড়াঁ খাড়াঁ ডাল ছাড়া চা গাছে আর কিছুই নেই। মার্চে যখন বৃষ্টি শুরু হবে তখন বের হতে শুরু করবে নতুন কুঁড়ি। সবুজে ভরে উঠবে চারদিক। চা-কন্যাদের পাতা চয়নের দৃশ্য আর কর্মচাঞ্চল্যে মুখর হয়ে উঠবে চা-বাগান গুলো।
সুত্র জানায়, মার্চে বৃস্টি হলে চা গাছে প্রথম ফ্লাস বা কুঁড়ি বের হয়। এ সময় শুরু হয় চা-পাতা চয়ন। যাকে বলা হয় টিপিং। মার্চের শেষ বা এপ্রিলের প্রথম থেকে পুরোদমে শুরু হয় চা পাতা চয়নের কাজ। যাকে বলা হয় প্লাকিং। ২-৩ মাস বন্ধ থাকা চা-কারখানাগুলোও তখন সচল হয়ে যায়। শুরু হয় চা উৎপাদন।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক ড. শামীম আল মামুন বলেন, আমাদের দেশে সাধারনত ৪ ধরনের প্রুনিং করা হয়। বিভিন্ন উচ্চতায় এই প্রুনিং করা হয়ে থাকে। ডিসেম্বরে লাইট প্রুনিং এবং জানুয়ারিতে ডিপ স্কিপ প্রুনিং করা হয়। বছরে ৩০ থেকে ৩৫ রাউন্ড চা পাতা প্লাকিং করা হয়ে থাকে। তিনি আরো বলেন, চা গাছের মঙ্গলের জন্যই অর্থাৎ চা গাছের অধিকতর উপকারের জন্যই প্রুনিং করা হয়ে থাকে।
চা বোর্ড সুত্র জানায়, গত ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়া চা উৎপাদন মৌসুমে দেশে বাম্পার চা উৎপাদন হয়েছে। এবারের উৎপাদন দেশের চা শিল্পের ১৬৭ বছরের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়বে বাংলাদেশ চা বোর্ড--এমনটাই আশা চা শিল্প সংশ্লিষ্টদের। গত নভেম্বর পর্যন্ত পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এবারের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অনেক বেশি চা উৎপাদন হয়েছে এবং চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ডের পথে রয়েছে বাংলাদেশ। গত ডিসেম্বরের চা উৎপাদনের হিসাব পাওয়া গেলেই চা শিল্প নতুন রেকর্ড গড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। এজন্য আর এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে।