রংপুরের পীরগাছায় ঝিনিয়া ধনির বাজার উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইব্রাহিম খলিলের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্ণীতি ও জাল সনদে চাকুরীর অভিযোগ তুলে তার অপসারণ দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছে এলাকাবাসী। শনিবার সকালে উপজেলার ঝিনিয়া ধনির বাজার উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে কয়েক শতাধিক নারী-পুরুষ। এ সময় তারা প্রায় এক ঘন্টা পাকার মাথা-সাতদরগা সড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে করে উভয় পাশের যানবাহনগুলো আটকে যায়।
এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার ঝিনিয়া ধনির বাজার উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রধান শিক্ষক ইব্রাহিম খলিল নানা অনিয়ম-দুর্ণীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি সম্প্রতি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা ছামসুল আলম মারা যাবার পর থেকে বেপরোয়া হয়ে উঠেন। তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয় ফান্ডের টাকা আত্মসাত, শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ, অর্থের বিনিময়ে রাতের আঁধারে পকেট কমিটি গঠন, অভিভাবকদের সাথে দুরব্যবহার ও দুর্ণীতির মাধ্যমে নিয়মিত কমিটির গঠনের চেষ্টা অভিযোগ তোলা হয়। এসব বিষয় নিয়ে ক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী মাইকিং করে শনিবার সকালে ধনির বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করে। তারা সড়কে ব্যারিকেট দিয়ে যান চলাচল আটকে রাখে। পরে পীরগাছা থানা পুলিশ ও স্থানীয় ইটাকুমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল বাশার ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
ওই এলাকার বাসিন্দা পীরগাছা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর এলাকা পরিচালক আবদুল রহিম বলেন, অনিয়ম-দুর্ণীতির কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ আজ নি¤œমূখী। এ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা আসছে চায় না। অভিভাবকদের সাথে দুরব্যবহার করা হয়। বিদ্যালয়ে কোন জাতীয় দিবসসহ কোন সরকারি কর্মসূচি পালন করে না বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি নিজের পকেট ভারী করতে ব্যস্ত।
এনামুল হক নামে শিক্ষক জানান, ৬ লাখ টাকা নিয়ে তাকে চাকুরী দেয়া হয়। তিন বছর চাকুরী করে কোন বেতন ভাতা না দিয়ে উল্টো তাকে বরখাস্ত করা হয়। তিনি টাকা ফেরত চাইলে তাকে হুমকি-ধামকি দেয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম ছামসুল হকের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার বাবা জমি দিয়ে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। অথচ তার মৃত্যুতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কোন শোক সভা কিংবা শোক জানায় নি। তিনি এখন বাইরের লোক দিয়ে পকেট কমিটি গঠনের চেষ্টা করছে। লুটপাটের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নেই। আমাদের পরিবারের কোন সদস্য তিনি রাখতে চান না। তিনি বিদ্যালয়ে একক অধিপত্যে বিস্তার করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক ইব্রাহিম খলিল বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা। আগের পরিচালনা কমিটি আমাকে যে ভাবে বলেছে আমি সেভাবেই বিদ্যালয় পরিচালনা করেছি। নিয়মতান্ত্রিক না হওয়ায় প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির পরিবারের কোন সদস্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে পীরগাছা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ সুজা মিয়া বলেন, একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর নির্বাচন বিষয়ে যদি কোন সুযোগ থাকে তাহলে ইউএনওর সাথে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।