গাইবান্ধার সাঘাটার উপজেলার বোনারপাড়া ও পদুমশহর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ঘোষিত ফলাফল বাতিলের দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) কারসাজি ও ফলাফল জালিয়াতির অভিযোগ এনে দুই ইউনিয়নের পরাজিত ৪ জন স্বতন্ত্র ও একজন নৌকার প্রার্থী সহ সকল মেম্বার প্রার্থী একত্র হয়ে এ আয়োজন করেন। গতকাল উপজেলা সদর বোনারপাড়ায় এ সাংবাদিক সম্মেলন চলাকালে স্ব স্ব প্রার্থীর সমর্থক সহ সাধারন লোকজন মিছিল শ্লোগান নিয়ে আসলে এটি প্রতিবাদ সভায় রুপ নেয়। এতে লিখিত বক্তব্যে বোনারপাড়া ইউপির স্বতন্ত্র প্রার্থী জসিউল করিম পলাশ (আনারস) বলেন, বিগত বছরের ২৭ নভেম্বর ঘোষিত তফসিলে এ ইউপিতে ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহনের সিদ্ধান্ত ছিলো। অথচ নির্বাচনের আগে হঠাৎ করেই সে সিদ্ধান্ত পাল্টে রহস্যজনক ভাবে ইভিএম ব্যবহারের কথা বলে স্থানীয় নির্বাচন অফিস। এছাড়াও তাদের মনমত প্রার্থীকে অবৈধ সুবিধা দিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। ইভিএমে ভোট করেও হাতে লেখা কাটাকাটি ফলাফল সীট প্রদান করা হয়েছে। ৭০% ভোট প্রদানও কোনভাবে সম্ভব নয় বলেও দাবি করা হয় এতে। এটি একটি লীল নকশার নির্বাচন দাবি করে ফলাফল প্রত্যাক্ষান করেন উপস্থিত প্রার্থীরা।
পরে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন, বোনারপাড়া ইউপির স্বতন্ত্র প্রার্থী আহসান কবির, জসিউল করিম পলাশ, আবদুল ওয়ারেছ প্রধান, পদুমশহর ইউনিয়নের আ.লীগ মনোনীত প্রার্থী এসএম মোজাহিদুল ইসলাম বকুল, স্বতন্ত্র প্রার্থী তৌহিদুজ্জামান স্বপন সহ প্রমুখ মেম্বার প্রাথীরা। বক্তারা বলেন, এই ইভিএম জালিয়াতির রায় জনগন মেনে নেয়নি। দুই ইউনিয়নে পরিকল্পিত ভাবে ইভিএম ব্যবহার করে জনগনের রায় পরিবর্তন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৫ম ধাপে সাঘাটা উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে বিছিন্ন ঘটনার মধ্যদিয়ে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাচন অফিস সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার পদুমশহর ইউনিয়নে ৭ হাজার ২৭৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন মফিজুল হক (স্বতন্ত্র), তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৌহিদুজ্জামান স্বপন পান ৫ হাজার ১৬৯, এএসএম মোজাহিদুল ইসলাম পান ৩ হাজার ৩৩১ ভোট ও বোনারপাড়া ইউনিয়নে ৭ হাজার ৪১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন নাছিরুল আলম স্বপন (নৌকা), তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আহসান কবির (স্বতন্ত্র) পান ৫ হাজার ৯১১, জসিউল করিম পান ৩ হাজার ৩২৭ ও আবদুল ওয়ারেছ প্রধান পান ২ হাজার ২০১ ভোট। এদিকে দুই ইউনিয়নে ইভিএমে ভোট গ্রহনের পরদিন থেকেই এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এ ব্যাপারে কথা বলতে উপজেলা নির্বাচন অফিসার আবু ছাইদের সাথে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরদার মোস্তফা শাহীনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ইভিএমে কোন প্রকার অনিয়ম হয়নি। এখানে সন্দেহ থাকার কোন অবকাশ নেই। সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে ভোট গ্রহন সম্পন্ন হয়েছে।