বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর উদ্ভাভিত উচ্চ ফলনশীল বারি সরিষ-১৮ এর চাষ করে লাভবান হচ্ছেন ফরিদপুরের চাষিরা। অন্য সরিষার চেয়ে ফলন বেশি হয়ায় ফরিদপুরে এ সরিষার আবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। উচ্চ ফলনশীল বারি সরিষ-১৮ বীজ উৎপাদন করে সারা দেশের চাষিদের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছে বিএডিসি ফরিদপুর।
উন্নত জাতের কোলেষ্টেরল বা ফ্যাটি অ্যাসিড (ওমেগা-৩ ও ওমেগা-৬) মানব হেদের জন্য উপকারী, সয়াবিন তেলের বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা যায় এবং বারি সরিষা- ১৪ ও বারি সরিষা- ১৭ এর তুলনায় দ্বিগুনেরও বেশী ফলন হওয়ায় বারি সরিষা-১৮ এর চাষ করে ভালবান হচ্ছে ফরিদপুরের চাষিরা।
এ জেলার মাটি ও আবহাওয়া সরিষা চাষের উপযোগী হওয়া চলতি মৌসুমে সরিষার ফলনো হয়েছে ভালো। আর মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই চাষিরা সরিষা ঘরে তোলবেন। জেলার ৯টি উপজেলাতেই কম-বেশী সরিষার আবাদ হয়ে থাকে। তবে সবচেয়ে বেশী সরিষা উৎপাদন হয় ফরিদপুর সদর, মধুখালী, বোয়ারমারী ও সালথা উপজেলায়।
চাষিরা জানায়, এক বিঘা জমিতে উচ্চ ফলনশীল বারি সরিষা-১৮ চাষে সবমিলে খরচ হয় চার থেকে সাড়ে সাড়ে চার হাজার টাকা। আর এক বিঘা জমির উৎপাদিত সরিষা ২০ থেকে ২৫হাজার টাকা বিক্রি করা সম্ভব। অল্প খরচে অধিক লাভ। রোগবালাই তেমন হয় না। অন্য সরিষার চেয়ে অধিক ফলন হওয়ায় বারি সরিষা-১৮ চাষ করেছি। ফলনো ভাল হয়েছে বাজারে চাহিদাও প্রচুর। সঠিক দাম পেলে আগামীতে আরো বেশী চাষ করবো।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় বারি সরিষা-১৮, বারি সরিষা-১৭, বারি সরিষা-১৪, টরি ৭ সহ প্রায় সাড়ে ৮হাজার হেক্টোর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে।
ফরিদপুর বিএডিসি’র ডাল ও তৈলবীজ উৎপাদন খামারের উপপরিচালক কৃষিবিদ মাহমুদুল ইসলাম খান জিয়া জানান, বারি সরিষা-১৮ তে ইরুসিড অ্যাসিড খুবই কম। যা মানব দেহের ক্ষতি করেনা। এ তেলে আরো উপকারী কোলেষ্টেরল রয়েছে, যেটা মানব দেহের জন্য উপকারী। সয়াবিন তেলের বিকল্প হিসাবে বারি সরিষা-১৮তেল আমরা ভজ্য তেল হিসাবে ব্যবহার করতে পারি। আমরা বীজ উৎপাদন করে সারাদেশের চাষিদের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছি। বারি সরিষা-১৮ চাষ বৃদ্ধি পেলে আগামীতে আমাদের আর সয়াবিন তেল বাহিরে থেকে আমদানি করতে হবে না। ফলে বিদেশ থেকে সয়াবিন তেলের আমদানি নির্ভরতা কমে আসবে। আমাদের দেশের চাষিরা লাভবান হবে।