ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের হলফ নামায় তথ্য গোপন করে একটি সিআর মামলার দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি নির্বাচনে অংশ নিয়ে সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় জনমনে ক্ষোভের সৃস্টি হয়েছে। নির্বাচিত সদস্যের প্রার্থীতা অবৈধ ও সদস্য পদ বাতিল পূর্বক শপথ বাক্য পাঠ না করানোর জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন, কান্দি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পরাজিত দুই প্রতিদ্বন্দ্বিী প্রার্থী। বৃহস্পতিবার এই আবেদনপত্র দাখিল করা হয়।
পরাজিত প্রার্থী নৃপেন মধু ও প্রেমানন্দ বৈরাগীর আবেদনসূত্রে জানাগেছে, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার মাঝবাড়ী গ্রামের এরশাদ আলী দাড়িয়ার ছেলে আক্তার দাড়িয়া ২০২১ সালের ৫ মার্চ তারিখে মাহাবুব মোল্যার (৪৮) বিরুদ্ধে কোটালীপাড়া থানায় পেনাল কোডের ৪০৬/৪২০ ধারায় অভিযোগ দায়ের করেন। কোটালীপাড়া থানার সিআর কেস নং-১১১/২০২১। আদালত ৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বলা হয়েছে ‘মামলার আসামি মাহাবুব মোল্যার ( ৪৮) বিরুদ্ধে ৪২০ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমানিত হওয়ায় তাকে ওই অভিযোগে দোষী সাব্যস্তে দুই বৎসরের সশ্রম কারাদ- এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা; জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদ-ে দন্ডিত করা হলো’। রায়ের সময় আসামি পলাতক ছিল।
আবেদনপত্রে আরও জানানো হয়েছে, চতুর্থ ধাপে গত ২৬ ডিসেম্বর নির্বাচনে কান্দি ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি মাহাবুব মোল্যা তাঁর হলফনামায় তথ্য গোপন করেছেন। তিনি তার মনোনয়ন পত্রে মামলার বিবরনের স্থানে সাজাপ্রাপ্ত কথাটি উল্লেখ করেননি। “যা স্থানীয় সরকার( ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ২৬ ধারার ২(ঘ) ধারা মোতাবেক কোন ব্যক্তি চেয়ারম্যান বা সদস্য পদে নির্বাচিত হইবার এবং থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি-তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যুন দুই বৎসরের কারাদ-ে দন্ডিত হন এবং তাঁহার মুক্তি লাভের পর পাঁচ বৎসরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে।”
নির্বাচনের রির্টানিং অফিসার ও কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার নিটুল রায় বলেন, প্রার্থীরা মনোনয়ন পত্র দাখিলের পর যাচাই বাছাইয়ের জন্য আমি কোটালীপাড়া থানায় লিখিত ভাবে জানতে চেয়েছি, কোন প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা বা সাজা আছে কিনা। তারা আমাকে এই সংক্রান্ত কোন তথ্য না দিতে পারায় আমি তাদের প্রার্থীতা বৈধ্য করেছি। এখন অভিযোগ হয়েছে যাচাই বাছাই করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, তথ্য গোপন করে নির্বাচনে অংশ নেয়ার অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযুক্ত মাহাবুব মোল্যা বলেন, আমার বিরুদ্ধে একটি সাজার রায় ছিল তা কোর্টে এ্যাফিডেভিডের মাধ্যমে মিমাংশা করেছি। পরে আমি নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হয়েছি। এখন যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন তারা আসল তথ্য না জেনে বিরোধীতা করছেন।