ঘরে ফিরেছে ঘরের ছেলে, তবে লাশ হয়ে। যে ছেলেটি এদেশের নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছে অথচ তার নিজের নিরাপত্তা এদেশে হলো না! পরিকল্পিত এই হত্যাকান্ডের সঠিক তদন্ত শেষে বিচারের দাবী মতলবের সকল মহল।
ছুটিতে বাড়ি আসার সময়, ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে তরুন সেনাসদস্যে মতলবের শাহিন আলম(২২)। গত ১৫ জানুয়ারী শনিবার ভোররাতে ছুটিতে বাড়ী (মতলব উত্তরে)আসার পথে নারায়নগঞ্জের চিটাগাং রোডে ছিনতাইকারীদের হাতে পড়ে।ছিনতাইকারীরা সব লুটে নেয়ার সময় হয়তো খানিকটা প্রতিরোধ করতে চাইলে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করলে তরুন এই সেনা সদস্য মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পথচারীদের সহায়তায় স্থানীয় হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার সেনা সদস্য শাহিন আলমকে মৃত ঘোষনা করে। শাহিন আলমের শরীরে ছুরির বেশ ক’টি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
শাহিন আলমের মৃত্যুর খবরে তার পরিবার তথা এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। শাহিন আলম স্থানীয় ছেংগারচর সরকারী ডিগ্রী কলেজে লেখাপড়া করতো এবং এলাকায় ফুটবল খেলোয়াড় হিসাবে সে ছিল খুবই জনপ্রিয়। তার মৃত্যুর সংবাদে সহপাঠী, বন্ধু-বান্ধব, সুভাকাঙ্খী ও স্থানীয় ক্রীড়া প্রেমিরা এসে তার বাড়ীতে ভীড় জমায়। সকলের উপস্থিতিতে শাহিনের বাড়ীতে এক শোকাবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
মতলব উত্তর উপজেলাস্থ ছেংগারচর পৌরসভার মানিকের কান্দি গ্রামের আরব আলী প্রধানীয়ার অত্যন্ত আদরের সন্তান এই শাহীন আলম। ৫ ভাই ২বোনের মধ্যে শাহিন ৬ষ্ঠ।
৩০শে ডিসেম্বর -২০১৯ সালে সৈনিক পদে যোগদান করেন শাহিন আলম। বর্তমানে বরিশাল ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত। বরিশাল ক্যান্টনমেন্ট থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে আসলে রাতে চিটাগাং রোড ডাচবাংলা মোড়ের কাছে এক বন্ধুর বাসায় রাতে থেকে সকালে বাড়ী যাবে বলে চিটাগাং রোডে আসে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।
নিহত সেনা সদস্য শাহিন আলমের লাশ ঢাকা সিএমএইচের হিমাগার থেকে ১৬ জানুয়ারী রোববার সকালে সেনাবাহিনীর হেলিকাপ্টার যোগে তার গ্রামের বাড়ীর ছেংগারচর স্কুল মাঠে নিয়ে আসা হয়। পরে উপজেলা মাঠে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয় এবং ইমামপুর পল্লী মঙ্গল হাই স্কুল মাঠে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।