পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নের বাঘলবাড়ি কৈ গ্রামের আদিবাসীসহ ৬টি পরিবারকে তাদের বাড়ি ও ভোগ দখলীয় জমি থেকে উচ্ছেদের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন এলাকার একটি প্রভাবশালী চক্র। জাল দলিল তৈরি করে জমি জবরদখল করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে চক্রটি। উচ্ছেদ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তারা। এই উচ্ছেদের অপচেষ্টার প্রতিবাদে ভূক্তভোগিরা মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছে। ভূমিহীন জামাল উদ্দিনের বসতবাড়ির উঠানে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আঃ কাদের মাস্টার।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন,হান্ডিয়াল বাঘলবাড়ি কৈ মৌজার ভিপি কেসভুক্ত ভূমির প্রকৃত মালিক প্রতিভা নাথ রায়,পিতা-রাজা রায়,দিঘাপাতিয়া,নাটোর। এই জমি তারা সরকারের কাছ থেকে একসনা লীজ গ্রহণ করে দীর্ঘ দিন যাবত ভোগ দখল করছে। ১৯৭৬ সালে জনৈক সাদারী প্রামানিকের কাছ থেকে উকিল উদ্দিন এই জমি খরিদ করে বলে তারা জানান। আদালত উকিল উদ্দিনের দলিল জাল বলে ঘোষনা করেন। উকিল উদ্দিন এই জমি আজগর আলী মোল্লার নিকট ১৯৮৫ সালে বিক্রি করেন। এই জমির ভোগদখলকারী এলাকার ভূমিহীনরা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়,এই জমির মধ্যে থাকা পুকুর নিমগাছি মৎস্য প্রকল্পের আওতায় নেওয়া হয়। এ সময় উকিল উদ্দিন চাটমোহর সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। মামলায় উকিল উদ্দিনের দলিল জাল বলে প্রমানিত হওয়ায় উকিল উদ্দিন কোন আপিল করেননি। সে জমি বিক্রি করে দেন। পরবর্তীতে অর্পিত এই সম্পত্তি নিজের দাবি করে আজগর আলী মামলা করেন। আজগর আলী মারা যাবার পর তার ৩ ছেলে আঃ সোবাহান,শামসুল আলম ও সাইফুল ইসলাম ভিপি কেসভুক্ত এই জমির মধ্যে কয়েকটি দাগ অবমুক্ত করার জন্য আবেদন করেছেন। আঃ সোবাহান নিজেও ৪৪৭ নং দাগের ৪৫ শতাংশ জমি একসনা লীজ নিয়ে ভোগ দখল করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয় এই তিন ভাই একসনা লীজপ্রাপ্ত ভূমিহীনদের উচ্ছেদের জন্য অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। অখচ সর্বশেষ সরকারি গেজেটে এই জমি প্রতিভা নাথ রায়ের বলে উল্লেখ রয়েছে। গেজেটে উকিল উদ্দিন কিংবা আজগর আলী দিং এর কোন নাম নেই। আরএস রেকর্ড তাদের নামে নয়। তাদের কোন বৈধ কাগজপত্রও নেই।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগিরা সরকারি সম্পত্তি রক্ষাসহ ভূমিহীনদের একসনা লীজ বলবৎ রাখার দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে আদিবাসী নরেন মাহাতো,অনাথ মাহাতো,জামাল উদ্দিন,আবুল কাশেম উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জানার জন্য আঃ সোবাহানের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনি জানান,তাদের বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। আদালতের রায় রয়েছে তাদের পক্ষে। আরএস রেকর্ড সংশোধনের জন্য মামলা করা হয়েছে। যারা এই জমি ভোগদখল করছেন,তাদের কোন কাগজপত্র নেই। আঃ কাদের গং যে অভিযোগ করেছেন,তা তথ্য নয়। তারা জোরপূর্বক জমি ভোগদখলের অপচেষ্টা করছে।
আঃ সোবাহানের ভাই এ্যাড.সাইফুল ইসলাম বলেন,যারা সংবাদ সম্মেলন করেছেন,তাদের কোন স্বত্ব নেই ওই জমিতে। আমাদের পক্ষে একাধিক রায় রয়েছে। আমরা বৈধভাবে জমির দাবিদার।