চুয়াডাঙ্গার জীবননগর বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রায় সাড়ে দশ বিঘা জমিতে থাকা অবৈধ দখলদারদের গড়ে ওঠা স্থাপনা বুধবার সকাল থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে শত শত কাঁচা-পাকা ও টিনসেড দিয়ে নির্মিত অবৈধ স্থাপনা ও দোকান পাট।
সরেজমিনে দেখা যায়,চুয়াডাঙ্গা-কালীগঞ্জ ভায়া জীবননগর-দত্তনগর সড়কের দু’ধারে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে সওজ অভিযান চালাচ্ছে। বুল্ডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে কাঁচা-পাকা স্থাপনা। অন্যদিকে সওজ’র পুরাতন ডাকবাংলো দখল করে গড়ে ওঠা স্থাপনাও একই ভাবে গুঁড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। ভেঙ্গে পড়ছে অবৈধ স্থাপনার টিন ও দেওয়াল। উপড়ে ফেলা হয়েছে লোহার খুঁটি ও ফ্লোরের ইট-পাথর। বুল্ডোজার দিয়ে একটার পর একটা স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। এসব স্থাপনার কথিত মালিকেরা ভেঙ্গে ফেলা স্থাপনার ইট,কাঠ,রড,টিনসহ বিভিন্ন মালামাল দ্রুত সরিয়ে নিচ্ছেন। অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়ার সময় শত শত মানুষ দাঁড়িয়ে উচ্ছেদ অভিযান দেখছিলেন।
সওজ চুয়াডাঙ্গা কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানায়, দীর্ঘদিন ধরে সওজ’র জীবননগরস্থ পুরাতন ডাকবাংলোসহ বাসষ্ট্যান্ড এলাকা ও জীবননগর-কালীগঞ্জ ভায়া জীবননগর দত্তনগর মহাসড়কের দু’ধারে সওজের জমি দখল করে একটি প্রভাবশালী মহল সেখানে ছোট বড় ঘর নির্মান করে তা পজিশন আকারে বিক্রি কিংবা ভাড়ায় দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। সওজের জমিতে গড়ে ওঠা একটি স্থাপনা ৮-৯ লক্ষ টাকায় বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। দখলদারদের ব্যাপারে নড়েচড়ে বসেন সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
এসব দখলদারদেরকে সওজের পক্ষ থেকে বার বার অবৈধ দখল ছাড়তে বিজ্ঞপ্তি দিলেও তা আমলে নেয়নি অবৈধ দখলদাররা। এদিকে গত ২১ জানুয়ারি অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নিতে সড়ক ও জনপথ বিভাগ মাইকিং করেন। এতে কিছু অবৈধ দখলদার সাড়া দিয়ে নিজেরাই তাদের ঘর সরিয়ে নিলেও অধিকাংশই তা আমলে নেয়নি। ফলে বুধবার সকাল থেকে সওজ উচ্ছেদ অভিযান শুরু শুরু করেন এবং তা বিকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এতে শত শত ছোট বড় স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমিতে সমস্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে আরো কয়েকদিন সময় লাগতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। সওজের সমস্ত জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলে দখল মুক্ত জমির বর্তমান বাজার মুল্য প্রায় দশ কোটি টাকা হবে।
উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্বে ছিলেন, সওজের উপকমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অনিন্দতা রায়,খুলনা বিভাগী প্রকৌশলী মতিয়ার রহমানসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা। এ সময় জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল খালেক নেতৃত্বে পুলিশ এবং উপজেলা ফায়ার সার্ভিস অভিযানে সহযোগীতা করেন।
চুয়াডাঙ্গা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা অনেকবার দখলদারদের জায়গা ছাড়ার জন্য নোটিশ দিয়েছি। কিন্তু কেউ আমাদের কথায় সাড়া দেয়নি। শেষ পর্যন্ত উচ্ছেদের জন্য মাইকিং করা হয়। এরপর বুধবার থেকে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। সওজের জায়গায় থাকা সমস্ত অবৈধ স্থাপনা ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয়া হবে। সে ক্ষেত্রে কোন সুপারিশ আমলে নেওয়া হবে না।