সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কামারালী বহুমুখি উচ্চবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ কামারালী গ্রামের কৃতী সন্তান আবদুল ওহাব (৮০) ইন্তেকাল করেছেন ( ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে স্ট্রোক করার পর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। তার পিতার নাম মরহুম খোদা মোল্যা। মৃত্যুর সময় তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে, দুই মেয়েসহ অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী, সহকর্মী ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে কামারালী দাখিল মাদ্রাসা মাঠে তার ছাত্র কামারালী গ্রামের সানা পাড়ার মতিয়ার মোড়লের জানাযায় অংশ নেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে পায়ে হেটে রওয়ানা হয় শিক্ষক আবদুল ওহাব। মাদ্রাসা মাঠে পৌছানোর আগেই তিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। তাৎক্ষনিক পার্শ্ববর্তী লোকজন তাকে উদ্ধার করে মাদ্রাসার পাশে আবদুল মজিদ খাঁর বাড়িতে নিয়ে যান।এ সময় তার অবস্থা খারাব দেখা দিলে গ্রাম্য ডাক্তারের পরামর্শক্রমে এ্যাম্বুলেন্স যোগে যশোর নিয়ে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। তারপর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য কলারোয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত্যু বলে ঘোষনা করেন। প্রকাশ থাকে যে, ১৯৪২ সালে সাতক্ষীরার সদর থানার ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের বিহারীনগর গ্রামে মামার বাড়িতে আবদুল ওহাবের জন্ম হয়। তাঁর বাড়ি সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কামারালি গ্রামে। পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন কামারালি বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পর তিনি শিক্ষকতা পেশা বেছে নেন। প্রায় ৩৮ বছরের শিক্ষকতা জীবনে তাঁর অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন। অবসর নেওয়ার পর দুই থেকে তিন প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। দীর্ঘ সময় অতিথি শিক্ষক ছিলেন কলারোয়ায় প্রতিষ্ঠিত বিএড কলেজে। তাছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের একটি প্রকল্পে প্রশিক্ষক হিসেবে দেশব্যাপী প্রায় ছয় বছর চাকুরি করেছেন। তিনি দীর্ঘ সময় যশোর শিক্ষাবোর্ডের প্রধান নিরীক্ষকও ছিলেন। তার বড় মেয়ে হাসি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে যুব উন্নয়নের একজন বড় কর্মকর্তা। বড় ছেলে বকুল ঢাকা কলেজ থেকে লেখাপড়া শেষ করে একটি জনপ্রিয় অনলাইন পত্রিকায় কাজ করছেন। মেঝে ছেলে বাবু এম এ পাশের পর একজন বড় ব্যবসায়ী। ছোট মেয়ে শিউলি এমএ পাশ করার পর মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন এবং ছোট ছেলে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে বিসিএস দিয়ে শিক্ষা ক্যাডারে যশোর সরকারী এম এম কলেজে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের কর্মরত আছেন। সন্তানদের পক্ষ থেকে তার পিতার রুহের মাগফিরাত কামনা করে সবার কাছে দোয়া চাওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার জানাযা নামাজ শেষে কামারালী গ্রামে পারিবারিক কবর স্থানে তাকে কবরস্থ করা হবে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।