দিঘলিয়ার সোনিয়া হত্যার রহস্য ফাঁস হয়েছে।অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে গৃহবধু সোনিয়ার। দুই সন্তানের জননী গৃহবধু সোনিয়া বেগম (২৬) কে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে তাঁর পাষ- স্বামী মোঃ ইব্রাহীম (৩২)।
ঘাতক ইব্রাহিম বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারী) বিকালে খুলনা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দিঘলিয়া থানার ওসি তদন্ত রিপন কুমার সরকার। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, ২৫ জানুয়ারী রাতে খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার দিঘলিয়া গ্রামের খান পাড়ায় সোনিয়া বেগম নামে এক গৃহবধুর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। ঘটনার দিন রাত অনুমানিক দেড়টার দিকে থানায় খবর আসে সোনিয়া বেগম নামে এক গৃহবধু গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ ঘরের মেঝেতে শুয়ে আছে দেখতে পাই। নিহতের গলায় গার্মেন্টসের ফিতার ডাবল ভাঁজ ছিল।
তিনি আরও জানান, তাৎক্ষণিকভাবে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করি। সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করার সময় লাশের গলায় একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাই। আত্মহত্যা কিনা সন্দেহ সৃষ্টি হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা। তবে নিহতের স্বামীর দাবি গার্মেন্টসের ফিতা দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে তার স্ত্রীর আত্মহত্যা করেছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খুলনা ‘ক’ সার্কেল রাজু আহন্মেদ বুধবার(২৬ জানুয়ারি) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ঘটনার পর থেকেই নিহতের স্বজনদের দাবী ছিল সোনিয়াকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। স্বজনদের ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ঘাতক স্বামী ইব্রাহিম যৌতুকের দাবীতে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে সোনিয়ার উপর অত্যাচার নির্যাতন করে আসছিল। দুটো সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে স্বামী ইব্রাহিমের সকল নির্যাতন সহ্য করে আসছিল। সোনিয়ার স্বজনরা সোনিয়া হত্যার বিচার চায়।
নিহতের স্বামী ইব্রাহিমকে (৩২) ঘটনার পরদিন থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তাঁর স্ত্রীকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার কথা স্বীকার করে। দিঘলিয়া থানা পুলিশ রাতেই তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে। যার নং ১১,তাং ২৬/০১/২০২২।
মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) গ্রেপ্তারকৃত ইব্রাহীমকে কোর্টে চালান দেওয়া হয়। বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট এর আদালতে ঘাতক স্বামী ইব্রাহিম ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, প্রায় ৮ বছর পূর্বে একই উপজেলার পানিগাতী গ্রামের মোঃ সলেমান বিশ্বাসের কন্যা সোনিয়া বেগমের সংগে দিঘলিয়া গ্রামের খান পাড়ার ইসলাম খানের ছেলে ইব্রাহিমের সংগে বিবাহ হয়। তাঁদের সংসারে ৭ বছরের ১টি ছেলে এবং ৩ বছরের ১টি কন্যাসন্তান রয়েছে।
এদিকে ঘাতক ইব্রাহিমের ফাঁসীর দাবী জানিয়েছেন এলাকার বিজ্ঞমহল সহ সকল মানবাধিকার ও নারীবাদী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।