হিমালয়ের চারদিক দিয়ে অক্টোপাসের মতো ধেয়ে আসছে শীতের সাঁড়াশি আক্রমন। পারদ নিম্নমুখী হওয়ায় রীতিমত শৈত্যপ্রবাহ দিনদিন বেড়েই চলছে, আর থরথরে কাঁপছে হিমালয়ঘেষা নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার মানুষজন।
শীতের এই সমাগ্রীক দাপটে আকাশ মেঘাছন্ন হয়ে যাওয়ায় উত্তরী হাওয়ার অবাধ গতিতে মানুষের শরীরে হাড় কাঁপানো কাঁপুনী ধরেছে। গত ৩ দিন ধরে দুপুর পর্যন্ত সূর্য়ের দেখা মেলেনি বিকেলে কিছুটারোদ দেখা দিলেও পুবালী বাতাসে তা মলিন হয়ে যায়। উত্তরবঙ্গে শীতের দাপট বরাবরই বেশী থাকে। তার ব্যাতিক্রম এবারো ঘটেনি, তবে এবারের গত কয়েক দিনের শীত গত কয়েক বৎসরের তুলনায় অনেক বেশি। বিশেষ করে হিমালয় পর্বত সংলগ্ন নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার মানুষজন হাড়কাঁপানো শীতে থরথরে কাঁপছে মানুষসহ গবাদি পশু। সংশিষ্ট সুত্র মতে, ইতোমধ্যে সরকারের ত্রান ভান্ডার থেকে নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলায় এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ৭১০ টি কম্বল বিতরন করা হলেও তা প্রয়োজনের চেয়ে অপ্রতুল। এ ছাড়া নীলফামারী-১(ডোমার-ডিমলা) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকারের ব্যক্তিগত পক্ষ হতে ৯০০, নীলফামারী জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ফেরদৌস পারভেজের পক্ষ হতে ৪৫০, ডিমলা প্রেসক্লাবের পক্ষ হতে ১০০ কম্বল বিতরন করা হয়েছে। শুক্রবার বেলা ১১ টায় নীলফামারীর ডিমলায় আবহাওয়া অফিসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী তাপমাত্রা ছিলো ৮.৮ডিগ্রী সেলসিয়াস। তবে আবহাওয়া অফিসের দেয়া তথ্যের চেয়েও আরো কম বলে মনে করছেন, নীলফামারীর হিমালয় ঘেষা ডিমলা উপজেলার সাধারণ মানুষজন। তাদের মতে, ডিমলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৫ ডিগ্রী সেঃ। শীতের দাপটে সকাল হতে বিকাল পর্যন্ত শুরু হয়ে যায় শীত মহাকরণ। গত তিন দিন ধরে শীতের এমন আক্রমনে একটু উষ্ণতার জন্য উত্তরের সর্বশেষ হিমালয় ঘেষা উপজেলা ডিমলায় গরিব অসহায় মানুষজনের খড়কুটু জ¦ালিয়ে আগুনের পরশমনি ছিল একমাত্র ভরসা। ডিমলার তিস্তাসহ বিভিন্ন নদীর চর এলাকায় স্বরে-জমিনে গিয়ে দেখা যায়, আগুনের কুন্ডলী জ¦ালিয়ে শীত নিবারন করার চেষ্টা করছে অসহায় পরিবারগুলো। সব থেকে বেশী বিপাকে পড়েছে সহায় সম্বলহীন হতদরিদ্র পরিবারগুলো। শীতের পুরানো গরম কাপড়ের দোকানে শুরু হয়েছে উপচে পড়া ভিড়। এ ছাড়া শীতজনিত রোগে বয়স্ক ও শিশুদের নিউমোনিয়া, হাঁপানী, ক্লোড ডাইরিয়া, কাশিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। জেলা উপজেলা থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন বেড়েই চলছে শীত জনিত রোগির সংখ্যা। ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, সরকারী ত্রান ভান্ডার হতে উপজেলার গরীব দুঃখি অসহায় পরিবারের মাঝে ৭ হাজার ৭১০টি কম্বল ইতোমধ্যে বিতরন করা হয়েছে। গরীব মানুষ যাতে কষ্ট না পায় সেজন্য শীতবস্ত্র বিতরন অব্যাহত রয়েছে।