বাগেরহাটের মোল্লাহাটে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে এক শিশু শিক্ষার্থী (১০)’কে যৌন ও শারীরিক সীমাহীন অত্যাচার-নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ওই শিক্ষককে ধরতে মাদ্রাসাটি ঘিরে ফেলে এবং হামলা/তান্ডব চালানোর চেস্টা করে। এ সময় ঠেকাতে গিয়ে জনৈক চৌকিদার হেনস্থার শিকার হন। এখবরে ঘটনা স্থলে দ্রুত পুলিশ পৌছে গ্রামবাসীর রোষানল থেকে ওই শিক্ষককে উদ্ধার করে মোল্লাহাট থানায় নিয়ে যায়। পরে থানা হেফাজতে থেকেই সেচ্ছায় চাকরী ছেড়ে নিজ এলাকা পিরোজপুরের উদ্ধেশ্যে যান ওই মাদ্রাসা শিক্ষক জুবায়ের আহমেদ (২৫)।
গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার মোল্লারকুল মধ্যপাড়া কারী বাড়ী মনোয়ারা কওমি ইসলামিয়া মাদ্রসা ও এতিমখানায় এ ঘটনা ঘটে।
ভিকটিম শিশু জানায়, সে ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র, ওই শিক্ষক তাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে অমানুষিক নির্যাতন করে। ঘটনার রাতে (সোমবার) ঘুমানোর আগে তাকে জোর করে ২ লিটার পানি খেতে বলে, এত বেশি পানি খেতে পারবে না বলায় তাকে লাঠি পেটা করে, এরপর পানি অনেকখানি খেয়ে বলে, আর খেলে রাতে এস্তেঞ্জা (প্রশ্রাব) হবে অনেকবার, তখন শিক্ষক বলে ওই প্রশ্রাব তোকে খাওয়াবো, এরপর তাকে সবটুকু পানি খেতে বাধ্য করে। ওই রাতে সে তার কক্ষ থেকে বের হয়ে প্রশ্রাব করতে গেলে সেখানে ওই শিক্ষকও যান, এবং তাকে চুমু খেয়ে অশালিন আচারণ করেন। এরপর তাকে পাশে নিয়ে তাকে বলাৎকারের টেস্টা করে। শিশু এতে আপত্তি করায় তাকে ভয় দেখায়। একপর্যায়ে সে বাড়িতে এসে তার বাবার কাছে বলে।
ভিকটিমের বাবা জানান, তার ছেলেকে অসহনীয় অত্যাচার করেছে, লজ্জায় ছেলে আর ওই মাদ্রাসায় যেতে চাইছে না, তাই তাকে অন্য মাদ্রসায় দিবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
মাদ্রাসা সংলগ্ন দোকনদার আসলাম শেখ বলেন, শিশু নির্যাতনের ঘটনায় রাতে গ্রামের কয়েকশ লোক মাদ্রাসার ওখানে আসে। তখন হুজুরের পক্ষ নেয়ার কারণে এক চৌকিদার’কে মারপিট করে। এরপর পুলিশ এসে উপস্থিত উত্তেজিত সকলকে বুঝিয়ে ওই হুজুরকে থানায় নিয়ে যায়।
ওই মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সচিব লায়েক কাজীসহ কয়েক ব্যক্তি বলেন, গ্রামে দলা-দলি আছে, তাই ষড়যন্ত্র হইছে। গত রাতে থানায় বসে মিমাংসা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
হেনস্থার শিকার চৌদিার নুরু জানান, তিনি মাদ্রসার কাছ দিয়ে বাড়ি আসার পথে দেখেন অনেক লোক সেখানে। তখন তিনি সেখানে যান, এর আগে পুলিশ পৌছে। পুলিশের উপস্থিতিতে অন্তত তিনশত লোক হুজুরকে মারধর শুরু করে। তখন পুলিশ না ঠেকালেও তিনি ঠেকাতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন। হুজুরের বিরুদ্ধে এটা ষড়যন্ত্র বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন বিট পুলিশ কর্মকর্তা এসআই আবু হাসান জানান, অভিযোগটি মূলত মিথ্যা, হেফজ পড়া প্রস্তুত করতে না পারায়/পড়ার বিষয় নিয়ে ওই ছাত্রকে রাগ করায় এবং ছাত্রের পরিধেয় কাপড়ে প্র¯্রাব লাগছে কিনা তা দেখার ঘটনা ছেলেটি তার মা'র কাছে বলে, মা বিষয়টি ভুল বুঝে, এরপর বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা হয়। তবু, যেহেতু ওই হাফেজ সাহেবের দুর্নাম হয়েছে, তাই ওই মাদ্রাসায় তিনি আর যাননি।