‘আমার স্বামী বিদেশ থাকে। বাড়িতে আমি আমার তিন সন্তান নিয়ে বসবাস করি। ১৭ বছরের সংসার। তিল তিল করে সোনা গহনা, খাট-পালঙ্ক, টিভি- ফ্র্রিজ ও সুন্দর একটি ঘরসহ সব কিছুই করেছিলাম। কোন কিছুই নেই। মন্টু- রাশিদার লোকজন সবকিছু লুট করে নিয়ে গেছে। এখন আমি তিন সন্তানকে নিয়ে পথে পথে ঘুরছি’।
রোববার উপজেলার ক্যাফে ৭১ চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কন্ঠে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন গোপালগঞ্জে কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ ইউনিয়নের লোহারংক গ্রামের প্রবাসী বাশার মোল্লার স্ত্রী খাদিজা বেগম (৩৫)।
তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হিরণ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত সদস্য পদে জয়ী প্রার্থী মাহমুদা খানমকে আমরা ভোট দিয়েছি। এজন্য ক্ষিপ্ত হয়ে পরাজিত প্রার্থী রাশিদা বেগম ও তার স্বামী মন্টু শেখের লোকজন আমাদের বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে সবকিছু লুটপাট করে নিয়ে গেছে। আমরা ২৫টি পরিবার এখন বাড়িছাড়া। প্রাণ বাঁচাতে আমরা আজ প্রায় ১মাস ধরে বিভিন্ন আত্মীয়র বাড়ি অবস্থান করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ষাটোর্ধ্ব মমতা বেগম বলেন, আমার ৪টি ছেলে বিদেশ থাকে। নির্বাচনের দিন রাতে মন্টু-রাশিদার লোকজন আমাদের বাড়িতে হামলা করে সবকিছু লুটপাট করে নিয়ে যায়। তারা বাড়িতে অবস্থানরত মহিলা ও শিশুদের মারধর করে। আমরা এখন বাড়িতে থাকতে পারছি না। আমরা প্রশাসনের কাছে এই হামলা ও লুটপাটের বিচার দাবি করছি।
মালা বেগম (২৫) বলেন, মন্টু ও রাশিদার লোকজন শুধু বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে ক্ষ্যান্ত হয়নি। তারা আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। এতে আমাদের প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা কোটালীপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।
এ ছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে গৃহবধু শান্তা বেগম, জরিনা বেগম বক্তব্য রাখেন।
এ বিষয়ে হিরণ ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ১ আসনের সদস্য পদে পরাজিত প্রার্থী রাশিদা বেগমের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন।
অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা কোটালীপাড়া থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ জাকারিয়া বলেন, অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্তে যারা দোষী প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।