বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের দিন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ১৭ সংগঠনের সদস্যদের এফডিসিতে ঢুকতে দেওয়াই হয়নি। এ বিষয়টিকে অপমানজনক দাবি করে তিন দফা দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতি ও আন্দোলনের ডাক দিয়েছে ১৭ সংগঠন। গতকাল রোববার সংবাদ সম্মেলনে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নুজহাত ইয়াসমিনকে দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর, অযোগ্য এমডি আখ্যা দিয়ে তার অপসারণ চেয়েছেন চলচ্চিত্রকর্মীরা। তারা আরও দাবি করেছেন, শিল্পী সমিতির নির্বাচনে একটি প্যানেলকে সাপোর্ট দিয়েছেন তিনি। সেই প্যানেলের জন্য সুবিধা করে দিতেই এফডিসি ফাঁকা রাখতে চেয়েছেন এমডি। তবে গতকাল রোববার সকালে সংবাদ সম্মেলনে এফডিসির এমডি নুজহাস ইয়াসমিন তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘পীরজাদা হারুনের সঙ্গে আমার আঁতাত করার প্রয়োজন নেই। আমার সাথেও তার আঁতাত করার কোনো প্রয়োজন নেই। যারা এসব কথা বলছেন সেগুলো প্রমাণ করার দায়িত্বও তাদের। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের করোনাভাইরাস বিষয়ক নির্দেশনা মেনে শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হয়েছিল। আমার মনে হয়, আমি কোনো অন্যায় করিনি।’ নুজহাত আরও বলেন, ‘এফডিসির পাস হাজারও মানুষের কাছে আছে। কিন্তু মহামারি করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী, গণজমায়েত নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছে।’ তবে শিল্পকলা একাডেমিতে আট শতাধিক ভোটার ও শত শত মিডিয়াকর্মীর অংশগ্রহণে কি করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটি আমার দেখার বিষয় নয়।’ নির্বাচনে অংশ নেওয়া দুই পরিষদ চাইলে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করে সঠিক জায়গায় বিষয়টি উপস্থাপন করে সমাধান করতে পারত বলেও জানান এফডিসির এমডি। এই পরিপ্রেক্ষিতে তার সামনে কিছু প্রশ্ন তোলা হলে সেগুলোর সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। যেমন- চলচ্চিত্রের ১৭ সংগঠন থেকে বলা হয়েছে বারবার এফডিসির সঙ্গে মিটিং করলে তিনি ‘শোভনীয়’ আচরণ করেননি। তার কাছে প্রবেশের ব্যাপারে পরামর্শ চাইলে তিনি নিজেই চলচ্চিত্রকর্মীদের একটি ছোট তালিকা দাবি করেন। সেখান থেকে পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান ২০০ জনের একটি লিস্ট জমা দেন। সেটি পাসে হবে বলেও পাস করা হয়নি। পাশাপাশি চলচ্চিত্র সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুমোদন ছিল সবার প্রবেশের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ বিষয়ে নির্দেশনা দিলেও এফডিসির এমডির যোগসাজশে কেউ প্রবেশ করতে পারেননি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে এমডি তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে সবার নিরাপত্তার স্বার্থে এটি করা হয়েছে।’ এদিকে, নুজহাত ইয়াসমিনকে এফডিসির এমডির পদ থেকে অপসারণের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ১৭ সংগঠন। গতকাল রোববার এফডিসিতে তার কুশপুতুলও দাহ করা হয়েছে। চলচ্চিত্রকর্মীদের দাবি না মানলে লাগাতার কর্মবিরতি ও আন্দোলনের মাধ্যমে এফডিসিতে অচল অবস্থা তৈরিরও হুমকি দেওয়া হয়েছে।