নাগরিক সেবার মান বৃদ্ধি না করেই বহুগুনে অযৌক্তিক পৌরকর ধার্য্য, পৌরসভার নাগরিক সেবার সকল ক্ষেত্রে বানিজ্যকরনের প্রতিবাদে এবং ধার্য্যকৃত পৌরকর বাতিলের দাবীতে ভেড়ামারা পৌরসভার মেয়র কে ৫ দিনের আল্ট্রিমেটাম দিয়েছে নাগরিক কমিটি। সোমবার সন্ধ্যায় ভেড়ামারা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে ওই আল্ট্রিমেটাম দেয় সংগঠনটি।
ভেড়ামারা পৌরসভা সম্প্রতি হোল্ডিং ট্র্যাক্স বৃদ্ধি করে নোটিশ জারি করে। পৌরবাসীর অভিযোগ, পৌরকর ছিল ৪১০ টাকা। সেখানে হঠাৎ করেই পৌরকর ধার্য্য করা হয় ১৬ হাজার ৫’শ ৭৫ টাকার। কত গুন পৌরকর বৃদ্ধি পেয়েছে, তা ভেবেই কুল পাচ্ছেন না ওই পৌর বাসিন্দা। আবার ৩৪৫ টাকার পৌরকর এক লাফেই বৃদ্ধি পেয়েছে ১ হাজার ৬’শ ৪৫ টাকায়। কর বৃদ্ধির এমন হাজারো নোটিশে চরম ক্ষুব্ধ কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পৌরসভার নাগরিকরা। এমন অবস্থায় ভেড়ামারা পৌরসভার মেয়র আনোয়ারুল কবীর টুটুল নাগরিকদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন। সেখানেও নাগরিকরা সহনীয় পর্য্যায়ের পৌরকর নির্ধারনের দাবী জানান। পৌরসভার উন্নয়ন ও নাগরিক সুবিধা বাড়াতে সামঞ্জস্যপূর্ণ করারোপের জন্য আহ্বান জানিয়ে নাগরিকরা কর পরিশোধ করতে গিয়ে যাতে নাগরিক বিড়ম্বনা না বাড়ে সেদিকে নজর দেওয়ার তাগিদ দেন।
ভেড়ামারা প্রেসক্লাব’র কনফারেন্স রুমে আয়োজিত ওই সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, হঠাৎ করেই পৌর কর্তৃপক্ষ অস্বাভাবিক হারে কর বৃদ্ধি করে নোটিশ প্রদান করে ১’শ টাকা দিয়ে আপত্তি ফরম কিনতে বলা হয়েছে। এতে চরম বিব্রত পৌর নাগরিকরা। আপত্তি ফরমের মাধ্যমে পৌরসভার প্রায় ১০ হাজার হোল্ডিংয়ের বিপরীতে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অপকৌশল করা হয়েছে। হোল্ডিংয়ের ফলক সাঁটিয়ে নাগরিকদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে ১৫০হারে। পৌরসভা সেবামুলক প্রতিষ্ঠান হলেও এর প্রতিটি কার্যক্রম এখন বাণিজ্যিক। পৌরকর বকেয়া থাকলে দেওয়া হয় না জন্মসনদ, মৃত্যুসনদ, নাগরিকত্ব সনদ, ওয়ারিশ সনদ সহ কোন প্রকার সেবা। পৌরসভার এমন কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয় সাংবাদিক সম্মেলন থেকে। এ সময় দফা দাবী পেশ করা ভেড়ামারা পৌর নাগরিক কমিটি। ধার্যকৃত করের নোটিশ প্রত্যাহার, অনৈতিকভাবে বিক্রীত আপত্তি ফরমের টাকা ফেরত, নতুন কর ধার্য্য করার পূর্বে স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ সনের ৫৮ এর ১৪ ধারা অনুযায়ী বিদ্যমান ওয়ার্ড কমিটির (যদি না থাকে অবিলম্বে গঠন করে) মাধ্যমে প্রত্যেক ওয়ার্ডে মতবিনিময় সভা করা, সিটিজেন চার্টার বা নাগরিক সনদ প্রকাশ এবং হোল্ডিং ট্যাক্স বকেয়া থাকার অজুহাতে জন্মসনদ, মৃত্যুসনদ, নাগরিকত্ব সনদ, ওয়ারিশ সনদ সহ অন্যান্য সেবাসমূহ থেকে নাগরিকদের বঞ্চিত না করা সহ ৫ দফা দাবী পেশ করা হয়। বলা হয়, ৫ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে দাবীগুলো বাস্তবায়ন না করলে পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষনা করা হবে।
সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ভেড়ামারা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু হেনা মোস্তফা কামাল মুকুল, ভেড়ামারা পৌর নাগরিক কমিটির আহাবায়ক, ভেড়ামারা আদর্শ ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক আসাদুজ্জামান আসাদ, সদস্য সচিব ভেড়ামারা পরিপাটি নগরী’র আহাবায়ক আসাদুজ্জামান আসলাম, ভেড়ামারা উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মানিক মিয়া প্রমুখ।