যশোরের অভয়নগর উপজেলার শিল্প-বানিজ্য ও বন্দর নগর নওয়াপাড়ায় ঢুকে পড়েছে ভয়ংকর প্রতারক চক্র। এরা দিনে দুপুরে প্রকাশ্যে পথচারীদের বিশেষ কৌশলে (প্রতারনার ফাদে ফেলে) হিপটোনাইজ করে সর্বস্ব লুট করছে। এদের দ্বারা বশিভূত হয়ে সাধারণ মানুষ নিজে থেকেই স্বর্ণের গহনাসহ মূল্যবান সামগ্রী প্রতারকদের হাতে তুলে দিচ্ছে।
এমনই এক ভয়ংকর প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে মঙ্গলবার উপজেলার নওয়াপাড়ার ক্লিনিক পাড়া এলাকায়। এদিন সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে সড়কে এক পথচারী নারীকে হিপটোনাইজ করে দুই প্রতারক। পরে ওই নারী নিজেই তার পরিহিত আড়াই ভরি ওজনের স্বর্ণের গহনা নিজ হাতে খুলে প্রতারকদের হাতে তুলে দেয়। প্রতারকরা গহনা নিয়ে চলে যাওয়ার পর ওই নারী (সম্বিত) স¦াভাবিক অবস্থা ফিরে পেলে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে ঘটনাস্থলের পার্শ্বের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকের সিসি ক্যামেরা দেখে ঘটনাটির সত্যতা পাওয়া যায়। ভুক্তভোগী ও নারী নওয়াপাড়ার মৃত- পুলিশ বিহারীর স্ত্রী অনিতা বিশ্বাস (৭৫)। তিনি জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে তিনি হাসপাতাল রোড ধরে পায়ে হেটে নওয়াপাড়ার ওয়াপদা মোড় এলাকায় তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। নওয়াপাড়ার আল মদিনা ক্লিনিকের পূরাতন ভবনের নিকট পৌছালে কোর্ট-প্যান্ট পরিহিত আনুমানিক ৬০ বছর বয়সী জনৈক ব্যক্তি সালাম দিয়ে কেমন আছি জানতে চায়। ভালো আছেন বলে সামনে পা বাড়াতেই প্রায় সমবয়সী আর এক ব্যক্তি ছুটে এসে বলেন, “ চাচী আপনি কি ভুল করেছেন? উনি অনেক বুজুর্গ লোক; ওনার দোয়ায় অনেক কাজ হয়। ভালোভাবে কথা না বলে চলে আসলেন। বলে পুণরায় পাশে থাকা ওই ব্যক্তির কাছে নিয়ে যান। এবং তার নিজের মানিব্যাগ বের করে ওই লোকের হাতে দিয়ে দোয়া করতে বলেন। লোকটি দোয়া পড়ে মানিব্যাগে ফু দিয়ে তার হাতে দিয়ে দেয়। এবং একটি কাচের গুলি বের করে ওই মহিলার হাতে দিয়ে বলে ‘নাকের কাছাকাছি ধরে রাখেন দোয়া পড়ে দিচ্ছি।’ ওই পথচারী নারী কাচের গুলিটি নাকের কাছে ধললে অজ্ঞাত ওই ব্যক্তি কি পড়ে ফু দেয়। এরপর ওই নারী তার কথা মতো হাতে থাকা এক জোড়া স্বর্ণের রুলি, একজোড়া চেইনসহ স্বর্ণের কানের দুল ও গলায় থাকা একটি স্বর্ণের চেইন খুলে ওই ব্যক্তির হাতে দিয়ে দেয়। ওই নারীকে একটু সরে দাড়াতে বলে দুই প্রতারক মোট আড়াই ভরি ওজনের স্বর্ণের গহনা নিয়ে চম্পট দেয়। পরে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলেও প্রতারক চক্র মাস্ক পরিহিত থাকায় চেহারা শনাক্ত করা যায়নি। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছিলো। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর গোটা অঞ্চলে আতংক বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে অভয়নগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ এ কে এম শামীম হাসান জানান, বিষয়টি মৌখিকভাবে জেনেছি। এখনও কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে ঘটনা তদন্তে পুলিশ পাঠিয়েছি।