বঙ্গোপসাগর কোলঘেঁষা খুলনার পাইকগাছা-কয়রা উপজেলায় সুপেয় পানির সংকট কয়েক দশকের। এ সংকট নিরসনে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা নানা প্রকল্প নিলেও লবণাক্ততার কাছে হারমেনে আসছে বারংবার। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের তথ্যমতে, বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে এ দু’উপজেলার নদ-নদীর সংযোগ রয়েছে। ফলে সাগরের নোনাপানি সরাসরি উপজেলাগুলোতে পৌঁছে যাচ্ছে। এতে কোনো প্রকল্পই সফলতার মুখ দেখেনি এখনো। অবশেষে সকল প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে খুলনা-৬ সংসদ সদস্যর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সুপেয়পানি সংকট নিরসনে ৩৪.৭৯ কোটি টাকার একটি নতুন প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারী পরিকল্পনা কমিটিরসভায় খুলনার উপকূলীয় পাইকগাছা-কয়রায় সুপেয়পানি সংকট নিরসনে ৩৪.৭৯ কোটি টাকার নতুন এ প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। অনুমোদিত এ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে রেইন ওয়াটার হারভেষ্ট (ট্যাংকি), গভীর নলকূপ, ওয়াস ব্লকসহ নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থাপনা। এদিকে উপকূলীয় মানুষের দীর্ঘদিনের সুপেয় পানির সংকট নিরসনের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে জেনে আনন্দে উচ্ছ্বসিত তারা। অবহেলিতো এ অঞ্চলের মানুষের অভিমত, অসহায় মানুষের বোবাকান্না মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কানে পৌঁছালে তিনি কখনোই কাউকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেন না। সিডর, আইলা, আম্ফান, ইয়াস, ফনি, বুলবুলের আঘাতে বিধ্বস্ত পাইকগাছা-কয়রা মানুষ। বোবাকান্নায় ব্যথিত স্থানীয় সংসদ সদস্যর নিরলস পরিশ্রমের অবিষ্মরণীয় অর্জন সুপেয়পানি সংকট নিরসনে নতুন এ প্রকল্পের বরাদ্দ। পাইকগাছা-কয়রার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী এফএনএসকে বলেন, গণমানুষের আস্থাভাজন মো. আক্তারুজ্জামান বাবু এমপি পাইকগাছা-কয়রার বন্যা কবলিত নোনাপানি মানুষের দুর্দশার চিত্র বারবার জাতীয় সংসদে তুলে ধরেছেন। উপকূলের অবহেলিত জনসাধারণের নোনাপানির ছোবল থেকে বাঁচাতে ছুটে বেড়িয়েছেন মন্ত্রণালয় থেকে সচিবালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। বিধ্বস্ত উপকূলবাসীর হা-হুতাশ, বোবা আর্তনাদ খুলনা শহরসহ রাজধানী ঢাকাতে বিভিন্ন আলোচনাসভা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, মতবিনিময়সভা আয়োজনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ঊর্ধ্বতন মহলের কাছে তুলে ধরেছেন। খুলনার উপকূলীয় পাইকগাছা-কয়রা উপজেলায় সুপেয় পানির সংকট নিরসনে এমপি বাবু জাতীয় পর্যায়ে জনমত গঠন করতে দিনরাত পরিশ্রম করেছেন। যার ফসল আজকের উপকূলীয় অঞ্চলে সুপেয়পানি সংকট নিরসনে ৩৪.৭৯ কোটি টাকার নতুন এ প্রকল্প পাশ হয়েছে। সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু এফএনএসকে বলেন, পাইকগাছা-কয়রা উপজেলায় কোনো গভীর নলকূপ কাজে আসে না। অগভীর নলকূপের পানি পান করা যায় না। ফলে এই অঞ্চলের মানুষের সুপেয় পানির কষ্ট দশকের পর দশক ধরে, যা নিরসনের চেষ্টা করেও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষের সুপেয় পানির চাহিদা পূরণের জন্য মন্ত্রণালয়ে একটি প্রকল্প দাখিল করা হয়। সর্বশেষ মঙ্গলবার ১ ফেব্রুয়ারী পরিকল্পনা কমিটিরসভায় উপকূলীয় পাইকগাছা-কয়রা উপজেলায় সুপেয়পানি সংকট নিরসনে ৩৪.৭৯ কোটি টাকার নতুন এ প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদনের ফলে উপকূলীয় পাইকগাছা-কয়রা উপজেলায় বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে এলাকায় সুপেয়পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। সর্বোপরি প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ হেলাল এমপি, পরিকল্পনা মন্ত্রী আবদুল মান্নান এমপি এবং এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে পাইকগাছা-কয়রাবাসীর পক্ষে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।