গড়াই নদীর অবিরাম ভাঙ্গনে অনেক বসতবাড়ি বিলীন হয়ে গেলেও নতুন করে হুমকির মুখে পড়েছে গুচ্ছ গ্রাম ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িসহ শত শত বসতবাড়ি। নদীগর্ভে সবকিছু হারিয়ে অনেকেই এখন নিঃস্ব। সাধারণত বর্ষা মৌসুমে ভাঙ্গনের তীব্রতা দেখা দিলেও এবার শীত মৌসুমেও ৫ কি. মি. এলাকাজুড়ে তীব্র ভাঙ্গনের ভয়াল রুপ দেখা দিয়েছে। গড়াইয়ের পাড়ে বসবাসরত মানুষের দিন কাটছে প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে। ক্ষতিগ্রস্থ এসব এলাকায় সরকারী কোন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়নি ভাঙন রোধে। ফলে ক্রমেই ভাঙ্গন পরিস্থিতি ভয়ংকর রুপ নিচ্ছে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের গুচ্ছ গ্রাম ও আশ্রয়ণ প্রকল্পে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়,চরম ঝুকিতে আছে এই ইউনিয়নের গুচ্ছ গ্রাম ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িসহ পূর্বমাদলা ,পশ্চিম মাদলা খুলুমবাড়িয়া, জালশুকা, নলখুলা,সুবির্দাহ গোবিন্দপুর, কাশিনাথপুর গ্রামের মানুষদের বসতভিটা। দীর্ঘদিন যাবৎ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের সংস্কার না হওয়ায় ফাটল ধরে তা নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এছাড়াও হুমকিতে পড়েছে এসব এলাকার অনেক ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন ফসলি জমি। দুই যুগ ধরে একে একে গড়াই নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে বদলে গেছে উপজেলার এই ইউনিয়নের বড় একটি অংশের চিত্র। ভিটেবাড়ি, জমিজমা সহায়-সম্বল হারিয়ে কেউ আশ্রয় নিয়েছেন ওপারে জেগে ওঠা চরে কেউবা নিরাপদ আশ্রয়ে।
পূর্ব মাদলা গ্রামের বাসিন্দা আবদুল গণি বলেন গড়াই নদীর তীব্র ভাঙনে এলাকার অনেক বাড়ি সহ ফসলি জমি যে কোন সময় নদীতে বিলিন হতে পারে। আমরা খুবই আতংকের মধ্যে আছি। অতি সত্বর নদী ভাঙন রূখতে না পারলে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে গুচ্ছ গ্রাম ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরসহ ভিটে-মাটি এবং চাষাবাদের জমির বিস্তীর্ণ এলাকা।
সহায় সম্বল হারানো পশ্চিম মাদলা গ্রামের হাসিনা বেগম বলেন, নদীগর্ভে সবকিছু হারিয়ে এখন অনেকটাই নিঃস্ব হয়ে গেছি। আমার পরিবারের সবাই চলে গেলেও আমি স্বামীর ভিটা আকড়ে ধরে আছি। বর্তমান খুব কষ্টে দিন পার করছি।আমার পরিবারের অন্য সমস্যরা অন্যত্র গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।
হাকিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান জিকু বলেন, খুলুমবাড়ি থেকে কাশিনাথপুর পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার বেড়িবাধ দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় এর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে নদীতে মিশে গেছে। বর্তমান অনেক বসত ভিটাসহ ঝুকিতে রয়েছে গুচ্ছগ্রাম ও আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো। অতি দ্রুত সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার বলে মনে করি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানিজ ফাতেমা লিজা বলেন, ক্ষতিগ্রস্থদের পক্ষ থেকে তেমন কোন অভিযোগ পাইনি। আমি এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করবো।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদাহ পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে কোন তথ্য নেই। তথ্য পেলে যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।