দীর্ঘদিন সাধু সেজে ঘাঁপটি মেরে থাকার পর ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এককালের দুর্ধর্ষ সর্বহারা নেতা। নিরবে চাঁদাবাজির ঘটনার পর এবার এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য প্রকাশ্যে একাধিক ব্যক্তিকে শারিরিক লাঞ্ছিত করেছে ওই সর্বহারা নেতা ও তার সহযোগীরা।
এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাটি জেলার গৌরনদী উপজেলার সরিকল ইউনিয়নের শাহজিরা গ্রামের। ভূক্তভোগীদের অভিযোগে জানা গেছে, ওই গ্রামের বাসিন্দা এককালের সর্বহারা কামরুল গ্রুপের নেতা ও পরবর্তী সময়ে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার জুয়েল মৃধাকে ইতঃপূর্বে র্যাব-৮ এর সদস্যরা বাটাজোর এলাকা থেকে একটি রিভালবার ও দুই রাউন্ড গুলিসহ আটক করে। এছাড়াও তার (জুয়েল) বিরুদ্ধে বাবুগঞ্জ, উজিরপুর ও গৌরনদীসহ বরিশালের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
সূত্রে আরও জানা গেছে, র্যাবের অভিযানে অস্ত্রসহ গ্রেফতারের পর দীর্ঘদিন কারাভোগ করে জামিনে বের হয়ে নিরবে এলাকার নিরিহ ব্যক্তিদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করে আসছে জুয়েল মৃধা ও তার সহযোগীরা। ইতোমধ্যে একই গ্রামের আজিজ মীরের স্ত্রী নাজমা বেগম, সাকোকাঠী গ্রামের বারেক হাওলাদারের স্ত্রী সুফিয়া বেগম, আধুনা গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে মাকসুদ, চাঁন মিয়া মোল্লার ছেলে নেছার উদ্দিন মোল্লা, শাহজিরা গ্রামের মৃত মেছের মল্লিকের ছেলে জহির মল্লিক, মৃত আবদুর রহমান ক্বারীর ছেলে আবদুল মালেকসহ অসংখ্য ব্যক্তির কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে মোটা অংকের টাকা চাঁদা উত্তোলন করে জুয়েল ও তার সহযোগীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওইসব গ্রামের একাধিক বাসিন্দারা জানান, সাবেক দুর্ধর্ষ সর্বহারা নেতা জুয়েল মৃধা ও তার সহযোগীরা সম্প্রতি সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়িয়ে থেকে অনেকটা গাঁ ঢাকা দিয়েছিলেন। অতিসম্প্রতি তারা এলাকায় মাদক কেনাবেচার নিরাপদ ঘাঁটিতে পরিনত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। ফলশ্রুতিতে এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য তারা প্রকাশ্যে একাধিক ব্যক্তিকে শারিরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে। তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শুধু গ্রামবাসীর কাছ থেকেই নয়; সন্ত্রাসী জুয়েল মৃধা আমার কাছ থেকেও বিভিন্ন সময় বিনাকারণে একাধিকবার চাঁদা নিয়েছে। তার (জুয়েল) সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ভয়ে গ্রামবাসীর সাথে আমি নিজেও আজ অনেকটা ভীত। এলাকাবাসী সাবেক দুর্ধর্ষ সর্বহারা নেতা জুয়েল মৃধা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জুয়েল মৃধার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্ঠা করা হলেও তিনি ফোন রিসিফ না করায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে গৌরনদী মডেল থানার ওসি মোঃ আফজাল হোসেন বলেন, অতিসম্প্রতি জুয়েল মৃধার বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। যা তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।