কুষ্টিয়ায় বিদ্যালয়ের কমিটি গঠন নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনসার আলীকে ঝাড়- পেটা করে লাঞ্চিত করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। বুধবার বেলা ১১টায় কুষ্টিয়া শহরতলীর বারখাদা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এ ঘটনা ঘটে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিদ্যালয়ের কমিটি গঠন নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে প্রধান শিক্ষক আনসার আলীকে ঝাড়- পেটা করে লাঞ্চিত করেছেন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। বিদ্যালয়টির কমিটি গঠন নিয়ে স্থানীয় ক্ষমতাশীন দলের দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকায় একটি পক্ষ এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানা গেছে। বিক্ষুদ্ধ অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় মাঠে প্রধান শিক্ষককে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে এবং মানববন্ধন করে। ঝাড়-হাতে নিয়ে কয়েক শত শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকগণ এই মানববন্ধনে অংশ নেন।
এ সময় প্রধান শিক্ষক আনসার আলী বিদ্যালয়ে গেলে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া নারী-পুরুষ ঝাড়- হাতে নিয়ে তাঁকে লাঞ্চিত করে। এ সময় স্থানীয়রা ছুটে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। আন্দোলনে অংশ নেয়া অভিভাবক আজিজুর রহমান কাবলু জানান, দীর্ঘদিন ধরে কোচিং বাণিজ্য, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অধিক অর্থ আদায়, স্কুলের জমির লিজকৃত টাকা স্কুল ফান্ডে জমা না দেয়া, বিদ্যালয়টিকে মাদকের আখড়া বানানোসহ প্রধান শিক্ষক আনসার আলি বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। নতুন করে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের কাছে ফ্রম বিক্রিও করেছে এই প্রধান শিক্ষক।
কিন্তু হঠাৎ করে নির্বাচন না দিয়ে তার ইচ্ছেমত প্রার্থীকে সভাপতি বানানোর পাঁয়তারা করছে। তাই অবিলম্বে এই দূর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষককে তাঁরা অপসারণের দাবি জানিয়ে এই বিক্ষোভ করছেন।
এদিকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আনসার আলী বলেন, স্কুল কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। সকালে বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী লোকজন তাঁকে রাস্তায় আটকে হেনস্তা করার চেষ্টা চালায়। পরে তিনি একটি দোকানে আশ্রয় নিয়ে আত্মরক্ষা করেন।
বিষয়টি মোবাইল ফোনে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি থানার ওসিকে বিষয়টি জানাতে বলেন। পরে ওসি সাহেবকে জানালে তিনি ফোর্স পাঠিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে স্কুলে নিয়ে গেলে পুলিশের গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে নারী-পুরুষ উত্তেজিত হয়ে ঝাড়- হাতে নিয়ে পুলিশের সামনেই হামলা করার চেষ্টা করে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে লাঞ্চিত করে।
এ সময় অন্যান্যরা ছুটে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। পরিকল্পিতভাবে তাঁকে যারা লাঞ্চিত করেছে তিনি তাদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার (ওসি) সাব্বিরুল আলম জানান, ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন নিয়ে ওই স্কুলে ঝামেলা চলছিল। খবর পেয়ে পুলিশ বিষয়টি মিটমাট করে দিয়ে এসেছে।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাধন কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে মুঠোফোন যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।