পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় বরিশাল আদালত প্রাঙ্গণে চিত্র সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। অনতিবিলম্বে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিবৃতিদাতারা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি থেকে প্রেরিত বিবৃতিতে জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় চিত্র সাংবাদিকদের ওপর জালিয়াতি মামলায় কারাগারে প্রেরণ করা বাকেরগঞ্জের দাড়িয়াল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম হাওলাদারের সমর্থক ও আইনজীবী সহকারীদের হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। বিবৃতিতে ইউনিটির সভাপতি নজরুল বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক মিথুন সাহা সব সদস্যদের পক্ষ থেকে বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় এমন হামলা ন্যাক্কারজনক। আদালত চত্বরের মতো সংরক্ষিত এলাকায় প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের ওপর হামলায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নেতৃবৃন্দরা অবিলম্বে হামলাকারীদের আইনের আওয়াত এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
একই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী নাসির উদ্দিন বাবুল ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন এবং বরিশাল মেট্রোপলিটন প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কালাম আজাদসহ সব সদস্যরা।
অপরদিকে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছেন, সাংবাদিক ইউনিয়ন বরিশালের সভাপতি সাইফুর রহমান মিরণ, সাধারণ সম্পাদক ফিরদাউস সোহাগসহ ইউনিয়নের সদস্যরা। এ ছাড়া সাংবাদিক এ ছাড়া বিবৃতি দিয়েছেন, ন্যাশনাল ডেইলিজ ব্যুরো চিফ অ্যাসোসিয়েশনের (এনডিবিএ) নেতৃবৃন্দ, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের (বিএমএসএফ) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর, বরিশাল নিউজ এডিটরস কাউন্সিল, বরিশাল অনলাইন প্রেসক্লাব, বরিশাল তরুণ সাংবাদিক ফোরামসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।
উল্লেখ্য, জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া নিলাম বিক্রি, দলিল ও পর্চা সৃষ্টি করে অন্যের জমি আত্মসাতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বাকেরগঞ্জের দাড়িয়াল ইউপির চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হাওলাদার, তার ভাই আবদুর রশিদ হাওলাদার, আবুল হোসেন হাওলাদার, তহিদুল ইসলাম হাওলাদার এবং বোন শাহানুর বেগমকে বুধবার দুপুওে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালতের বিচারক। এ নির্দেশের পর বিকেলে তাদের কারাগাওে নেওয়ার সময় চিত্র সাংবাদিকরা ছবি নিতে যায় আদালত প্রাঙ্গণে।
এসময় চিত্র সাংবাদিকদের ছবি তুলতে বাঁধা দেওয়ার পাশাপাশি, তাদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালায় চেয়ারম্যানের স্বজন সুজন, সহযোগী সাইফুল, আইনজীবীর সহকারী নুরুজ্জামান, সজলসহ তাদের ভাড়াটিয়া লোকজনে। হামলায় স্থানীয় পত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলের কমপক্ষে ২০ জন চিত্র সাংবাদিক আহত হয়। পাশাপাশি ছয়টি মোটরসাইকেল ও বেশ কয়েকটি ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৪ নভেম্বও চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলামসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ভূক্তভোগী নরেন্দ্র পাল। আদালত মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন। চলতি বছর ১৪ সেপ্টেম্বর পুলিশ পরিদর্শক মোঃ সেলিম ঘটনার সত্যতা ও আবদুল মোতালেব হাওলাদার মারা যাওয়ায় তার অব্যাহতি চেয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।