কুমিল্লার হোমনায় যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে আরেক যুবলীগ নেতার করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা প্রত্যাহার চেয়ে আওয়ামী লীগ সভাপাতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ওসির কক্ষে দুই ঘণ্টা অবস্থান করেছেন নেতা-কর্মীরা। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যক্ষ আবদুল মজিদ ও সাধারণ সম্পদক একেএম সিদ্দিকুর রহমান আবুল হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কায়েস আকন্দের সঙ্গে নানা যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করেন। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা এবং অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ওসির আশ^াসে নেতারা বেরিয়ে যান। বৃহস্পতিবার বেলা এগারোটা থেকে একটা পর্যন্ত ওসির কক্ষে অবস্থান করেন তারা। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আবুল কাশেম প্রধান ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোশারফ হোসেন, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আবদুল মান্নান, যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান টিপু ও লাখ মিয়া, সাবেক প্যানেল মেয়র মানিক মিয়া ইমন, ঘারমোড়া ইউনিয়ন আ.লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী নেওয়াজ, মাথাভাঙা ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল ইসলাম প্রমুখ।
যুবলীগ সদস্য রোবেল আহম্মেদ গত ১ ফেব্রুয়রি মাথাভাঙা ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খবির খান, মো. আসাদ খন্দকার ও গাজী তানভীরকে আসামি করে হোমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদ এমপি গত ৩১ জানুয়ারি নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে উপজেলার ভাষানিয়া ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামের দরীদ্র মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন। ওই সময় স্থানীয় জনগণ ডুমুরিয়া ইসলামপুরের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিতাসের শাখা নদীতে বাঁশের সাঁকোর পরিবর্তে একটি সেঁতু নির্মাণের দাবি জানান। সংসদ সদস্য সেঁতু নির্মাণের আশ^াস দিয়ে সেই সাঁকোতে নদী পার হওয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হয়। আর সেই ছবিটি অপমান ও কটাক্ষ করে সাংসদের প্রতি জনগণের বিদ্বেষ এবং এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিসহ সরকারের উন্নয়নমূলক কার্যক্রমকে জনগণের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে খবির খান ব্যঙ্গাত্মক পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ করেন। এতে যুবলীগ নেতা রুবেলসহ সাংসদের অনুসারীগণ আসামীদের প্রতি সংক্ষুব্ধ হওয়েছেন মর্মে এজাহারে উল্লেখ করেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে রুবেল আহম্মেদ অন্য তিন যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে গত ১ ফেব্রুয়ারি হোমনা থানায় ডিজিটাল নিরপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ আবদুল মজিদ ও সাধারণ সম্পাদক একেএম সিদ্দিকুর রহমান আবুল বলেন, আমাদের তিনজন নেতার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ডিজিটাল আইনে মিথ্যা মামলা হয়েছে। এই মামলা প্রত্যাহার চেয়ে আমরা ওসি সাহেবের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি আশ^াস দিয়েছেন। দুই দিন দেখে আমরা আমরা কর্মসূচি ঘোষণা দেব।
এ ব্যাপারে হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কায়েস আকন্দ বলেন, সংসদ সদস্যের সেঁতু পারাপারের একটি ফেইসবুকে প্রচার হলে সেটিকে কটাক্ষ করে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ এনে ডিজিটাল আইনে একটি মামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পদ এটির প্রত্যাহার চেয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে এর আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।