দীর্ঘ দিনের জলবদ্ধায় চরম দুর্ভোগে তিন শতাধিক পরিবার। যেখানে একসময় ফসল হতো এখন সেখানে দীঘ সময় ধরে পানি জমে থাকায় তৈরী হয়েছে নোংরা পরিবেশ এবং নানা রোগের উপদ্রব্য।
এটি ফরিদপুর শহরতলীর ডিক্রীরচর ইউনিয়নের সিএন্ডবি ঘাট সংলগ্ন আইজউদ্দিন মাতুব্বরের ডাগি গ্রামে। সরেজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পাশ্বর্তী পদ্মা নদী থেকে বেশ কয়েক জন বালু ব্যবসায়ী ট্রলার বা ঝাহাজ থেকে তুলে সিএন্ডবি ঘাট পদ্মা পাড়ের (আইজমুদ্দিন মাতুব্বরের) এলাকায় জড়ো করে। আর এই বালু থেকে বের হওয়া পানি এলাকাটিতে ছড়ি পড়ে সৃষ্টি করে জলবন্ধতা। এছাড়াও বর্ষার ও বৃষ্টির পানিতেও একই অবস্থার সৃষ্টি করেছে। আর এই ভাবে চলছে গত ৪ বছরের বেশি সময়। সেখানকার বসবাসকারিরা অনেকেই নিজবাড়ী থেকে বের হতে বাঁশের সাঁকো তৈরী করেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পানি নিস্কাশনের যে পথ ছিলো সেগুলো নানা ভাবে দখল হয়েছে, এছাড়াও ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী ও অর্থবৃত্তের মালিক হওয়া তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়টি অনেকবার স্থানীয় ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে। তবে স্থানীয় প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে দ্রুত এই জলবন্ধতা নিরশন করা হবে।
পানিবন্দি এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম, আসমা বেগম, মোমেনা বেগম, হায়দার খানসহ অনেকেই জানান, এই গ্রামে পাশে যে মাঠ সেখানে ধানসহ বিভিন্ন ফসল হতো, কিন্তু গত ৪/৫ বছর হলো সারাবছর পানি জমে থাকে। সেখানে কোনে ক্ষেতখামার করা যায় না, এছাড়াও প্রত্যেকটি বাড়ি চার পাশে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়া পরিবেশটি বসবাসের অনুপোযোগি হয়ে গেছে। এখানকার ছেলে -মেয়েরা সব সময় বিভিন্ন রোগ-শোকে ভুগছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য পাঞ্জু শেখ বলেন, বালুর ও বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ বহু আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। পানিনিষ্কাশনের পথগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হয় না। ফলে দীর্ঘ সময় ধরে চলা জলাবদ্ধতা সমস্যারও সমাধান হয় না।
এছাড়াও বর্ষার সময়ে পানি গোটা এলাকায় নিমজ্জিত হলে সেই পানি বের হওয়া তেমন কোনো পথ থাকে না ফলে জলাবদ্ধতার সমস্যাও প্রকট হয়।
স্থানীয় মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলনা নাজমুল হাসান বলেন, এই জলাবদ্ধতায় আমরা সববাস করতে পারছি না, শিশুদের নিয়ে পরিবারের সদস্যদের রয়েছে বিপদে, গৃহপালিত পশু-পাখি পালন করা যাচ্ছে না। তিনি দাবি জানিয়ে বলেন দ্রুতই এই জলাবদ্ধতার সমাধান না করতে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘব হবে না।
ডিক্রীরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টু ফকির বলেন, বিষয়টি নিয়ে উপজেলা উন্নয়ন সভায় তুলা হয়েছে, স্থানীয় প্রশাসন আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন দ্রুত জলাবদ্ধতা নিরশন করা হবে।
সম্প্রতি এলাকাটি পরিদর্শনের আসেন ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকতা মাসুদুল আলম বলেন, ‘জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।’ তিনি বলেন, নানাবিধ সমস্যার কারণে বর্ষা বা বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে যেতে পারছে না। তা ছাড়া আমাদের পানি নিস্কাশনের পথ গুলো অত্যন্ত নাজুক। আমরা দ্রুতই এই জলাবদ্ধাতার সমাধানের চেষ্টা করবো’।