৮০ বছরের বৃদ্ধ শাহজাহান হাওলাদার। এ বয়সের ৩০ বছরই কাটিয়েছেন খালপাড়ের একটি ঝুপড়ি ঘরে। একটু বৃষ্টি হলেই ঘরের চালা গলিয়ে গড়িয়ে পড়ে পানি। সামান্য বাতাসে নড়বড় করে তাদের ঘর। এ ঘরেই বৃদ্ধ শাহাজাহান তার স্ত্রী নুরুন্নাহারকে নিয়ে কাটিয়ে দিয়েছেন জীবনের দির্ঘ এ সময়। অন্যের দেওয়া সহযোগীতা এবং বাড়ি বাড়ি কাজ করে স্ত্রী যা পায় তা দিয়েই চলে তাদের সংসার।
শাহজাহান ও তার স্ত্রীর বসবাস ঝিনাইদহ জেলার ভারতীয় সীমান্তের মহেশপুর উপজেলার ১১নং মান্দারবাড়ীয়া ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামে। ওই গ্রামের কাঠগড়া বাওড়ের খালপাড়ে তালপাতা ও পলিথিনের ছাউনিতে তৈরী জরাজীর্ণ ঘরে ভোগান্তি নিয়ে বসবাস করছেন শাহাজাহান ও তার স্ত্রী। সরেজমিনে দেখা যায় তালপাতা ও পলিথিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি একটিমাত্র ঘর, যা বসবাসের অনুপযোগী।
তবে, সরকারি সহায়তায় ভূমিহীনদের ঘর দেয়ার খবরে শেষ আশা দেখছেন শাহাজাহান হাওলাদার। তবে বৃদ্ধ শাহজাহানের সে স্বপ্ন কখনো বাস্তবে রূপ পাবে কিনা জানেন না। সরকারী সহায়তায় ভূমিহীনদের ঘর পাওয়ার আশায় জীবনের শেষ প্রাান্তে এসে স্ত্রীকে নিয়ে একটু মাথা গোঁজার স্বপ্নে বিভোর শাহজাহান চেয়ারম্যান মেম্বারদের বলেও কোন লাভ হয়নি।
শাহজাহানের পূর্বের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলায়। জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে প্রায় ৩০ বছর আগে ঝিনাইদহের মহেশপুরে চলে আসে। এখানে এসে একটি ধানের চাতালে কাজ শুরু করেন। দির্ঘ বছর পর শরীরের শক্তি হারিয়ে এখন পরের সাহায্য সহযোগীতায় দিন চলে।
প্রতিবেশিরা জানান, একটু ঝড়বৃষ্টি হলেই তারা আমাদের বাড়িতে চলে আসে। তারা অসহায় মানুষ,আপদ বিপদে আমরা সাহায্য সহযোগীতা করি কিন্তু আমরা আর কত করবো? সরকার যদি তাদের একটা বাসস্থানের ব্যাবস্থা করে দেয় তাহলে এদের জন্য খুব ভাল হয়। সে ঘর পাবার প্রাপ্য সরকারের কাছে আমরা দাবি করছি সরকার যেন তাকে একটি ঘর করে দেয়।
ভুমহীন অসহায় শাহাজাহান হাওলাদার কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান,একমাত্র ছেলে সে পাশেই পরিবার নিয়ে ভালই আছে কিন্তু আমাদের খোঁজ নেয়না। কদিনই আর বাজবো বাবা কতবার চেয়ারম্যান মেম্বারদের বলেছি ঘর পাইনি। এখন দয়া করে আপনাদের মাধ্যমে যদি সরকার যে ঘর দিচ্ছে সে ঘর যদি আমার দেয় তাহলে শেষ বয়সে আমি স্ত্রীকে নিয়ে একটু মাথা গোজার ঠাই পেতাম।
৭নং মান্দারবাড়ীয়া ভাটপাড়া ওয়ার্ডের নবনির্বচিত ইউপি সদস্য শাহিনুর রহমান জানান, সে সরকারী ঘর পাবার যোগ্য, নতুন করে বরাদ্ধ এসছে কিনা আমার জানা নেই, যদি আসে তাহলে সে অবশ্যই পাবে।
এমন ব্যক্তির তথ্য দেওয়ার জন্য এ প্রতিনিধিকে ধন্যবাদ জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুল করিম বলেন,আমরা এমন লোকদের খুজছি। ঘরের জন্য তালিকা চলছে। নাম ঠিকানা দিয়ে যান তার ঘর হয়ে যাবে।