মাঘের বৃষ্টি ফরিদপুরের চাষিদের কাছে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। শীতের শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে ক্ষেতের মাটির আদ্রতা কমে গেয়েছিলো। মাটির আদ্রতা কমে যাওয়ার ফলে পেঁয়াজ বীজ, হালি পেঁয়াজ, গম, মুশুড়, কালোজিরা, ধনিয়াসহ বিভিন্ন ফসলের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ হয়ে উঠেছিলো। ফসল উৎপাদন ব্যহত হওয়ার আশঙ্কায় চাষিদের চোখ মুখে চিন্তার ভাজ পড়েছিলো। ঠিক তখনই অসময়ের বৃষ্টি চাষিদের আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। অসয়ের বৃষ্টির কারণে ক্ষেতে আদ্রতা ফিরে এসেছে। ফলে চাষিদের আর বাড়তি টাকা খরচ করে সেচ দেওয়ার প্রয়োজন হবেনা। অন্যদিকে ক্ষেতের ফসলও নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে।
অসময়ের বৃষ্টি প্রসঙ্গে পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনকারী নারী উদ্যোক্তা শাহীদা বেগম বলেন, এই বৃষ্টি আমাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। ক্ষেতের জো কমে গিয়ে ছিলো। জো কমেজাওয়ার কারণে ক্ষেতের ফসল সঠিক ভাবে বেড়ে উঠতে পারছিলোনা। চিন্তার মধ্যে পড়েগিয়েছিলাম কিভাবে ৩০-৩৫ একর জমিতে সেচ দিবো। অনেক টাকারও দরকার। তাছাড়া সাধারণ ফসলের ক্ষেতে সহজেই সেচ দেওয়া যায় কিন্তু পেঁয়াজ বীজের ক্ষেতে সেচ দেওয়া অনেক কষ্টসাধ্য। গতবছর প্রখর রোদের কারণে পেঁয়াজ বীজের ফুল শুকিয়ে গিয়েছিলো। তার পরেও সেচ দিতে পারিনি। জমিতে সেচ দিতে না পারার কারণে অনেক ফলন কমে গিয়েছিলো। এবছর বৃষ্টি আমাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। বৃষ্টির কারণে ক্ষেতের ফসল নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে।
সদর উপজেলার নরসিংহদিয়ার আদর্শ কৃষক আলম ব্যাপারী বলেন, চলতি মৌসুমে আমি ৪৫ একর জমি চাষাবাদ করেছি। আমার জমিতে এখন আছে বারি ৪ পেঁয়াজ, বারি ৫ পেঁয়াজ, সূর্যমূখী, কালোজিরা, গম। আমার প্রতিটি ফসলে পানির প্রয়োজন ছিলো। কিছু জমিতে পানি দেওয়াও শুরু করেছিলাম। হঠাৎ গতকালের বৃষ্টিতে আমার জমিগুলো ভিজিয়ে দিয়ে গেছে। এখন আর পানি দেওয়ার জন্য বাড়তি টাকার প্রয়োজন হবে না। আল্লাহ তালার অশেষ রহমতের পানিতে আমার জমির ফসল নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. মো: হজরত আলী বলেন, শীত মৌসুমের শুস্ক আবহাওয়ার কারণে মাটির আদ্রতা কমেযায়। ফলে এ সময় চাষিদের ফসলের ক্ষেতে সেচ দেওয়ার প্রয়োজন হয় ফসলের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য। এই বৃষ্টি চাষিদের জন্য আশীর্বাদ। চাষিদের টাকা খরচ করে ক্ষেতে সেচ দেওয়া লাগবে না। ফলে চাষিদের উৎপাদন খরচ কিছুটা হলেও কমবে।