বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চা আবাদি ব্যবস্থাপনা ও হাতে কলমে প্রশিক্ষণের জন্য ছয় দিনব্যাপী ‘৫৬তম বিটিআরআই বার্ষিক প্রশিক্ষণ কোর্স-২০২২’ আজ (৫ ফেব্রুয়ারি) শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বিটিআরআই প্রশিক্ষণ রুমে শুরু হয়েছে। কোর্সটিতে মৃত্তিকা ব্যবস্থাপনা, উন্নত জাত নির্বাচন কৌশল, আধুনিক চা চাষাবাদ পদ্ধতি (প্রুনিং, টিপিং, প্লাকিং, ড্রেনেজ ও খরা ব্যবস্থাপনা) পোকামাকড় ও রোগবালাই ব্যবস্থাপনা, চা প্রাণরসায়ন, স্ট্যাটিস্টিক্স, চা প্রক্রিয়াজাতকরন ইত্যাদি বিষয়াদি হাতে কলমে সংশ্লিষ্ট চা বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞ কর্তৃক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
এ উপলক্ষে চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিট মিলনায়তনে শনিবার সকাল ১০ টায় বার্ষিক প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আলী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোঃ আশরাফুল ইসলাম, এনডিসি, পিএসসি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সপ্তাহব্যাপী আয়োজিত ৫৬তম বার্ষিক প্রশিক্ষণ কোর্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশীয় চা সংসদের সিলেট ব্রাঞ্চ চেয়ারম্যান ও ভাড়াউড়া টি ডিভিশনের জেনারেল ম্যানেজার গোলাম মোহাম্মদ শিবলী, প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. একেএম রফিকুল হক।
এছাড়া ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘৫৬তম বিটিআরআই বার্ষিক কোর্স-২০২২’ এর আহ্বায়ক ও উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ ইসমাইল হোসেন সহ সকল চা বিজ্ঞানী, বিভিন্ন বাগান হতে আগত প্রশিক্ষনার্থীগণ এবং সিনিয়র প্লান্টার্সবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মুক্ত আলোচনায় সিনিয়র টি প্লান্টার্স এবং প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্য থেকে ইস্পাহানী টি কোম্পানীর জেরিন টি এস্টেট এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সেলিম রেজা, চট্টগ্রামে অবস্থিত প্রডিউস ব্রোকার্স লিমিটেড এর এক্সিকিউটিভ মাইশা রহমান এবং সাবারী টি প্লান্টেশনের ব্যবস্থাপক গোপাল পাল বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ চা গবেষণা ইন্সটিটিউট প্রতি বছর দেশের ১৬৭টি চা বাগানের ব্যবস্থাপক, সহকারি ব্যবস্থাপকদের জন্য এই প্রশিক্ষণ কোর্সের আয়োজন করে থাকেন। এই বছর বার্ষিক কোর্সটিতে দেশের চা বাগানসমূহের ৩১টি চা বাগান হতে ৪২ জন নব নিযুক্ত সহ-ব্যবস্থাপক বৈজ্ঞানিক উপায়ে চা চাষের সামগ্রিক বিষয় স¤পর্কে প্রশিক্ষন গ্রহন করবেন।
বিটিআরআই সূত্র জানায়, বাংলাদেশের মানুষের কাছে চা একটি অত্যাবশ্যকীয় পানীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বব্যাপিও চায়ের চাহিদা অনেক বেশি বেড়ে গেছে। বাংলাদেশের এই দ্রুত বর্ধমান জনসংখ্যার সাথে পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পাওয়া চা পানের চাহিদা বাংলাদেশের চা শিল্পের জন্য একটি বিশাল অভ্যন্তরীণ বানিজ্য ক্ষেত্রের সৃষ্টি করেছে। চা’য়ের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি চা’কে গুণে-মানে উন্নতকরণ এবং বৈচিত্রায়ণ করা প্রয়োজন। প্রতিযোগীতাময় বৈশ্বিক বাজার আর আধুনিক প্রজন্মের এই চাহিদা পূরণ করা বাংলাদেশ চা শিল্পের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তাই বাংলাদেশ চা বোর্ড দেশে উন্নতমানের চা উৎপাদন ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।