নারীর ফাঁদে ফেলে হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি হাবিবুর রহমানকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২০০২ সালে কুমিল্লার হোমনা উপজেলার আসাদপুর ইউনিয়নের মুন্সিকান্দি গ্রামের স্বপন হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত এ আসামি দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে পলাতক ছিলেন।
ফাঁদ পাতা নারী বন্ধুর মাধ্যমে লাঞ্চের আমন্ত্রণ জানিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে কুমিল্লার রেইসকোর্স এলাকার ‘রেড রুফ ইন’ হোটেল এ- রেস্টোরেন্ট থেকে তাকে গ্রেফতার করেন হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কায়েস আকন্দ। এ সময় তিনি কফি পান করছিলেন। বুধবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলা হাজতে পাঠানো হয়েছে। হাবিবুর রহমান হোমনা উপজেলার আসাদপুর ইউনিয়নের দড়িকান্দি গ্রামের আবদুর রশিদের ছেলে।
থানা সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালের ১৮ মার্চ মাটি কাঁটার শ্রমিক একই ইউনিয়নের মুন্সিকান্দি গ্রামের মৃত হাসু মিয়ার ছেলে স্বপন খুন হয়। এই ঘটনায় পরের দিন ১৯ মার্চ নিহত স্বপনের বাবা হাসু মিয়া মো. ছালাউদ্দিন, হাবিবুর রহমান, আবদুর রহামান, আবদুল হাকিম, আজিজুল, সুরাইয়া বেগমসহ সাত জনের নামে হোমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে দ্ইু নাম্বার আসামি করা হয় হাবিবুর রহমানকে। দীর্ঘ চার বছর পর ২০০৬ সালের ১৫ মে এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। এতে আবদুল হাকিমকে খালাস দিয়ে হাবিবুর রহমানসহ বাকী ছয় জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বিশ হাজার টকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। দণ্ডাদেশের পূর্বে জামিনে থেকে হাবিবুর রহমান ও আজিজুল পলাতক ছিলেন। দণ্ডাদেশের পূর্বে এবং পলাতক হওয়ার আগে হাবিবুর রহমান ১ বছর ১১ মাস ১৪ দিন হাজতবাস করেন। অন্য আসামিরা জেল খেটে জামিনে আছেন।
গ্রেফতারের পূর্বে পলাতক জীবনে নাম ঠিকানা পরিবর্তন করে হাবিবুর রহমান থেকে রাকিব উল হাসান, পিতা- আ. রশিদ, মাতা- সুফিয়া বেগম, গ্রাম- পশ্চিম শেখদী, দনিয়া, ডাকঘর- মাতুয়াইল-১৩৬২, যাত্রবাড়ি, ঢাকা এই ঠিকানা ধারণ করে ২০১৪ সাল থেকে নির্বাচন অফিস ঢাকার আগারগাঁওয়ে আউট সোর্সিংয়ে চাকুরি করে আসছিলেন।
এ ব্যাপারে হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কায়েস আকন্দ বলেন, গত ২০০২ সালে নিজ এলাকার শ্রমিক স্বপন খুনের পলাতক আসামি হাবিবুর রহমানকে নারীর ফাঁদে ফেলে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রায় ৩মাস পূর্বে কৌশলে তার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে মহিলা সোর্সের মাধ্যমে ফোনালাপ করিয়ে তাকে নারীর বন্ধুত্বের ফাঁদে ফেলা হয়। ওই নারী বন্ধুর মাধ্যমেই তাকে ঢাকা থেকে কুমিল্লা শহরের রেসকোর্স এলাকার রেড রুফ ইন হোটেলে লাঞ্চের আমন্ত্রণ জানিয়ে আনা হয়। সেখান থেকেই মঙ্গলবার বিকেলে আসামীকে গ্রেফতার করে বুধবার কোর্টের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।