পহেলা ফাল্গুন বা বসন্ত উৎসব, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন ফরিদপুরের ফুল চাষিরা। করোনার কারণে গত দুই বছর লোকসান গুনতে হয়েছে ফুল চাষিদের। তাছাড়াও ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ ও আমফানেও ফুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। তার পরেও নতুন করে শুরু ফুল চাষ করেছেন লাভের আসায়। চাষিরা বলছেন, এবার বিধি নিষেধ না থাকলে ফুলের ভালো দাম পাবেন, করোনার ক্ষতি কাটিয়ে লাভের মুখ দেখবেন। ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন তারা।
বৈচিত্রময় ফসলের জেলা ফরিদপুরে ফুল চাষ একেবারেই নতুন। একসময় এ জেলার মানুষ যশোর জেলার ফুল দিয়েই প্রয়োজন মিটিয়ে থাকতেন। এখন আর যশোরের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় না। এ জেলার তরুন উদ্যোগতাদের ফুল দিয়েই স্থানীয় চাহিদা পুরন করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাহিদা পুরন করছে। দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ফুল চাষের আবাদ। আর এ ফুল চাষে তরুন উদ্যোক্তাদের আগ্রহ বেশী দেখা যাচ্ছে।
বর্তমানে ফুলের ভরা মৌসুম চাষিদের বাগানে শোভা পাচ্ছে বাহারি রংঙের গোলাপ, হরেক রকম জারবেরা, চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা, গ্লাডিওলাস, জিপসি, রজনীগন্ধাসহ নানা জাতের ফুল। ফুলের বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষিরা। সামনে তিনটি দিবস থাকায় ব্যস্ততা বেড়েছে তাদের।
ফরিদপুর শহর তলীর গধাধর ডাঙ্গী গ্রামের তরুন উদ্যোক্তা লিয়াকত হোসেন জানান, করোনার কারণে গত দুই বছরে ৫০ থেকে ৬০লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বাগানের উৎপাদিত ফুল বাগানেই নষ্ট হয়েছে। করোনার সময় আয় ছিলোনা কিন্তু ফুল গাছ পরিচর্যা করে সার-অষুধ দিয়ে আকড়ে ধরে আছি। করোনা কমে গেলে ফুলের চাহিদা ধিরে ধিরে বাড়তে থাকে। এখন কোন প্রকার বিধি নিষেধ না আসলে পহেলা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস ও ২১শে ফেব্রুয়ারীতে ফুরের ভালো দাম পাবো। আসা করছি এই তিনটি দিবসে ফুল বিক্রয় করতে পারলে করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবো। বর্তমানে ১টি গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০টাকা, জারবেরা ১৫ থেকে ২০টাকা, রজনীগন্ধা ১০টাকা, চন্দ্রমল্লিকা ৫টা, গ্লাডিওলাস ১২ থেকে ১৫টাকা। আসা করছি সামনের তিনটি দিবসে ফুরের দাম আরো বাড়বে।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. হজরত আলী জানান, ফুল চাষ লাভজনক হওয়ায় এ অঞ্চলে ফুল চাষ দিন দিন বেড়েই চলেছে। তবে করোনা শুরুর পর ফুলের বাজার সংকোচিত হয়ে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্থ হয় এ অঞ্চলের ফুল চাষিরা। ফুল চাষে সরকারি ভাবে প্রণোদনার ব্যবস্থা না থাকায় আমরা চাষিদের পরামর্শ ছাড়া কোন প্রকার আর্থিক সহযোগিতা করতে পারিনি।