মনজুয়ারা বেগম বাবুগঞ্জের এক সংগ্রামী নারীর নাম! তিনযুগ পূর্বে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধহন মুলাদী উপজেলার দিনমজুর সেলিম সরদারের সাথে। পারিবারিক অভাব অনাটনের মধ্যে জীবনের অর্ধেকটা সময় অতিবাহিত করেন। একসময় দুটি সন্তান রেখে স্বামী অনত্র চলে যায়। আরো অসহায় হয়ে পরেন মনজুৃযারা বেগম। মীরগঞ্জের রাস্তার পাশে অন্যের জমিতে কুঁড়েঘরে বসবাস করতেন এবং জীবিকার তাগিদে বেচে নেন ভিক্ষাবৃত্তি, ভিক্ষাবৃত্তির দীর্ঘপথ অতিক্রম করে এক মেয়ে বিয়ে দেন এবং একমাত্র ছেলেকে এসএসসি পর্যন্ত পড়াশুনা করান। বছর খানেব পূর্বেই স্থানীয় কিছু মানুষের আর্থিক সহায়তায় ভিক্ষাবৃত্তির পেশা ছেড়ে বাবুগঞ্জ-মুলাদী ফেরীঘাটে, বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনেসহ বিভিন্ন স্থানে গানের তালে হেটে হেটে বাদাম বিক্রি করতেন মনজুয়ারা বেগম। গানের তালে বাদাম বিক্রির বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আমীনুল ইসলামের নজরে আসে বিষয়টি। তিনি খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন মনজুযারা বেগমের অসহায়ত্বের কথা। ভিটামাটিহীন মনজুয়ারা বেগমকে পুনর্বাসনের লক্ষে ইতিমধ্যেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারে ঘর প্রধান করেন। এছাড়াও অসহায় ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মনজুয়ারা বেগমকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ও ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে জীবিকার জন্য একটি দোকানঘর নির্মাণ ও আনুষাঙ্গিক পন্যসামগ্রী প্রদানের মাধ্যমে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আমীনুল ইসলাম। ১১ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার সকাল ১১ টায় মনজুয়ারা বেগমের কাছে দোকানঘরের চাবি,আনুষাঙ্গিক মালামাল ও নগদ টাকা হস্তান্তর করেন। পুনর্বাসিত হওয়ার পর আবেগে আপ্লুত মনজুয়ারা বেগম বলেন, ‘যারা দোকানঘর দিয়েছে তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সেই সাথে তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের জন্য দোয়া করেন তিনি। এ সময় তিনি আর আর ভিক্ষা না করার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আমীনুল ইসলাম বলেন, দেশে দারিদ্র্য নিরসনে সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন ও ভিক্ষাবৃত্তির মতো অমর্যাদাকর পেশা থেকে নিবৃত্ত করার লক্ষ্যে ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর আবাসন,ভরণ-পোষণ এবং বিকল্প কর্মসংস্থানের মাধ্যমে তাদেরকে পুনর্বাসিত করা হচ্ছে। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো, ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীকে পুনর্বাসন ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের আয়বর্ধক কর্মকা-ে সম্পৃক্ত করা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রহমতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মৃধা.মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান মিলন, রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শাহাব উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম,ইউপি সদস্য সুমন শিকদার,ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা আলাউদ্দিন খান প্রমূখ।