কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সুলতানা রাজিয়া নামে এক অফিস সহকারীকে তাৎক্ষনিক বদলী করায় ক্ষিপ্ত হয়ে শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) হাসপাতালে তান্ডব চালিয়েছে সুলতানা রাজিয়া ও তার স্বামী মোজাম্মেল হক। তারা হাসপাতালে আক্রমণ চালিয়ে কোষধ্যক্ষ বিল্লাল হোসেনের হাত ভেঙ্গে দিয়েছে। তান্ডবকারী মোজাম্মেল হককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সুলতানা রাজিয়া দম্পতির ভয়ে আতঙ্কে ছিল চিকিৎসক ও কর্মচারীরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সুলতানা রাজিয়া কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটরকে গত ৮ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালকের কার্যালয় থেকে প্রশাসনিক কারণে কক্সবাজারের রামু উপজেলায় তাৎক্ষনিক বদলী করা হয়। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তাকে কর্মস্থল ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষনিক বদলীর খবর শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে বৃহস্পতিার রাতে হাসপাতালের কোষাধ্যক্ষ বিল্লাল হোসেনকে রাজিয়া সুলতানা ও স্বামী মোজাম্মেল হক পিটিয়ে হাত ভেঙে দেয়। কোষাধ্যক্ষকে গুরুতর অবস্থায় কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
অপরদিকে সুলতানা রাজিয়ার স্বামী মোজাম্মেল হক কসবা উপজেলার মেহারী ইউনিয়নের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের নিরাপত্তা প্রহরী। তাকেও বেশ কয়েকমাস আগে চাদঁপুর জেলা সদরে বদলী করা হয়েছিল। তিনিও যোগদান করেননি বলে জানান নাম প্রকাশ না করা এক ব্যক্তি।
শনিবার সকালে বিল্লাল হোসেন হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অরুপ পালকে বিষয়টি অবহিত করে ছুটি নিতে আসলে রাজিয়া ও স্বামী মোজাম্মেলক হকসহ পরিবারের অন্য লোকজন এসে আবারও বিল্লালের উপর আক্রমণ চালায়। এ সময় লাঠি নিয়ে দৌড়া দৌড়ি করে হাসপাতালে তান্ডব লিলা চালায় রাজিয়া দম্পতি। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকেও মারধোরের জন্য তেড়ে আসে। এ ঘটনায় হাসপাতাল চিকিৎসক ও কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। খবর পেয়ে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মর্কতা (ওসি) মুহাম্মদ আলমগীর ভূইয়ার নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে এবং সুলতানা রাজিয়ার স্বামী মোজাম্মেল হককে গ্রেপ্তার করে।
কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অরুপ পাল বলেন, অফিস সহকারী সুলতানা রাাজিয়াকে কক্সবাজারের রামু উপজেলায় বদলী করা হয়েছে। তার ধারণা এতে হাসপাতালের কোষাধ্যক্ষ বিল্লাল হোসেন জড়িত। সুলতানা রাজিয়ার স্বামী তাকে পিটিয়ে হাত ভেঙে দিয়েছে। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় বিল্লাল হোসেনের উপর আবারও আক্রমণ চালায় সুলতানা রাজিয়া দম্পত্তি। আমরাও একটি সাধারণ ডাইরী করব।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আলমগীল ভূইয়া বলেন, হাসপাতালের কোষাধ্যক্ষের হাত ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। মোজাম্মেল হক নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে থানা হাজতে রাখা হয়েছে। হাসপাতালে লাঠি দিয়ে আক্রমণ করার ঘটনায় হাসপাতাল কতৃপক্ষকে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত সুলতানা রাজিয়া বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি সঠিক নয়।