দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫২৫ মেগাওয়াটের ৩টি ইউনিটে এক যোগে বিদ্যুৎ উৎপাদন চালু থাকায় সেচ মৌসুমের বাড়তি বিদ্যুৎ চাহিদা পুরণ করেও দেশের উত্তরাঞ্চলে ১৬ জেলায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে কেন্দ্রটি। এতে কৃষিখাত ছাড়াও এ অঞ্চলের ছোট বড় শিল্প কারখানায় উৎপাদন বৃদ্ধির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। বছরের অন্যান্য সময় একযোগে ৩টি ইউনিট চালুর থাকার ঘটনা বিরল। তবে, বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত চীনা ও বাংলাদেশি প্রকৌশলীদের অক্লান্ত চেষ্টা ও পরিশ্রমে নিয়মিত ওভারহোলিং করে ৩টি ইউনিটই চালু রাখা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতিদিন ব্যবহার করা হচ্ছে প্রায় ৫ হাজার মে.টন কয়লা। এতে উত্তরাঞ্চলের বিদ্যুতের চাহিদা পুরণ করতে বড়পুকুরিয়া কয়লা ভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা সংকটের মধ্যেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৭ শতাধিক শ্রমিক ৩টি ইউনিট থেকে পর্যাক্রমে নিরবিচ্ছিন বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে।
এদিকে, বৈশ্¦িক মহামারি করোনার কারণে পৃথিবীর অনেক দেশে শিল্প কলকাখানায় স্থবিরতা সৃষ্টি হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কেউ এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়নি।
করোনার মধ্যেও বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা দক্ষাতা প্রদর্শনে সক্ষম হওয়ায় তাদের মধ্যে ১৩০ জনের চাকুরীর ক্ষেত্রে পদোন্নতির সুপারিশ করেছেন বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী এস. এম ওয়াজেদ আলী সরদার। এছাড়াও মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে মুজিব কর্ণার স্থাপন, শহীদ মিনার ও মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে বলে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সুত্র জানা গেছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে বর্তমান সাফল্য ও বিতরন পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী এস.এম ওয়াজেদ আলী সরদার বলেন, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লার সরবরাহ কম থাকলেও বিদ্যুৎ উৎপাদনে কোন সমস্যা নেই। চলতি বছর দুটি ইউনিটের ওভার হোলিংয়ের কাজ শেষ করে ধারাবাহিক ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়ে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহে যাতে কোন সমস্যা না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে ৩টি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। এতে দেশের উত্তরাঞ্চলে কৃষি ও শিল্পখাতে নিরবিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ চাহিদা পুরণ করা সম্ভব হচ্ছে।