ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ শহরের ডায়াবেটিক সমিতির হাসপাতালটি অবস্থিত। মোবারকগঞ্জ চিনিকল কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে ২০১৪ সালে কালীগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতি এবং একটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পুরাতন জীর্ণশীর্ণ ভাড়া করা একটি দ্বিতল ভবনের পাঁচটি কক্ষে চলছে হাসপাতালটির সেবাদানের সার্বিক কার্যক্রম। এখানে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা প্রদানের জন্য ডায়াবেটিক চিকিৎসায় অভিজ্ঞ একজন ডাক্তার, একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা,একজন রিসিপশনিস্ট একজন ল্যাব সহকারী, একজন করে আয়া ও নাইট গার্ডসহ মোট ৬ জনে কালীগঞ্জ ডায়াবেটিক হাসপাতালে সেবা যাচ্ছেন। এই ডায়াবেটিক হাসপাতালে রয়েছে অত্যাধুনিক ডিজিটাল এস জি হেলথ কেয়ার ৪০ ৪উ আলট্রাসনো মেশিন। রক্তের বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষার জন্য রয়েছে আধুনিক এনালাইজার মেশিন,ইসিজি মেশিনসহ রোগ নির্ণয় আধুনিক সব মেশিন ও যন্ত্রাংশ। হাসপাতালটি সকাল ৮ টা থেকে বেলা ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকে। আর এই সময় সার্বক্ষণিক রোগী দেখছেন ডাক্তার তাজউদ্দীন। প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৭০ জন ডায়াবেটিক রোগী এই হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহন করছেন।
কালীগঞ্জ ডায়াবেটিক হাসপাতালে একজন ডায়াবেটিক রোগী ১০০ টাকা মূল্যে রশিদ সংগ্রহ করে ব্লাড সুগার পরীক্ষা এবং ডাক্তার দেখিয়ে পরামর্শ গ্রহন করতে থাকেন। অবশ্য অন্যত্র একজন ডায়াবেটিক রোগীর এই সেবাটি গ্রহন করতে ব্যয় করতে হয় ১৬০ টাকা বা তারও বেশি।অর্থাৎ একজন ডায়াবেটিক রোগী কালীগঞ্জ ডায়াবেটিক হাসপাতাল তথা উপজেলা পর্যায়ে ডায়াবেটিক সম্পর্কিত যেকোনো স্বাস্থ্যসেবা সাশ্রয়ী মূল্যে গ্রহন করতে পারেন।শুধু তাই নয় কালীগঞ্জে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী সকল বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একমাত্র কালীগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতির এই হাসপাতালটিতে সকল প্রকার রোগীর পরীক্ষা নিরীক্ষার ক্ষেত্রে ৫০% ডিসকাউন্ট প্রদান করা হয়। আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য যেসকল অত্যাধুনিক এবং ডিজিটাল মেশিন কালীগঞ্জ ডায়াবেটিক হাসপাতালে রয়েছে যা কালীগঞ্জের অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে নেয়।হাসপাতালটির ১১ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরী পরিচালনা পরিষদ রয়েছে।যার সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ঝিনাইদহ ৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক দুইবার স্বর্ণপদক প্রাপ্ত বিশিষ্ট সমাজসেবক গোলাম রসুল।
দুঃখজনক হলেও সত্য কালীগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতির হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠার ৭ বছর পার হলেও আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির অন্তভুক্ত হতে পারেনি। গতবছর কালীগঞ্জ ডায়াবেটিক হাসপাতাল সমাজসেবা অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত হয়।হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নেওয়া একজন নিয়মিত ডায়ঢাবেটিক রোগীর হলেন শহিদুল ইসলাম।
কালীগঞ্জ ডায়াবেটিক হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আশিকুর রহমান সোহাগ জানান,নানা প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে কালিগঞ্জ ডায়াবেটিক হাসপাতাল রোগীদের সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির টিম দুই দুইবার কালীগঞ্জ ডায়াবেটিক হাসপাতালটি পরিদর্শনপূর্বক বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির অন্তভুক্তির প্রতিশ্রুতির দিয়েছিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় তা আজো কার্যকর হয়নি।আমাদের হাসপাতালটি যদি বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির তালিকাভুক্ত হয়, তাহলে কালীগঞ্জ উপজেলার ডায়াবেটিক রোগীরা এই হাসপাতাল থেকে সকল প্রকার উন্নত মানের চিকিৎসা গ্রহন করতে পারবেন বলে আমি মনে করি।
কালীগঞ্জ ডায়াবেটিক হাসপাতালের পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল জানান,কালীগঞ্জবাসীকে সকল প্রকার স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের নিমিত্তে জাতীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের একান্ত উদ্যোগেই প্রতিষ্ঠিত হয় ডায়াবেটিক হাসপাতালটি। বর্তমানে বিশেষায়িত এই হাসপাতালের করুন দৃশ্য দৃশ্যমান।
বাংলাদেশে যেমন ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা বেশি, তেমনি ডায়াবেটিক বৃদ্ধির হারও বেশি। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের স্থান শীর্ষ ১০ ডায়াবেটিক সংখ্যাধিক্য দেশের মধ্যে দশম। কিন্তু আরও ভয়াবহ তথ্য হলো, ২০৩০ ও ২০৪৫ সালে বাংলাদেশ নবম অবস্থানে থাকবে।