গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলাবাসির দীর্ঘ দিনের স্বপ্নের তিস্তা পিসি গার্ডার সেতু এখন দৃশ্যমান হয়ে দাড়িয়েছে। প্রতিদিন হাজারও উৎসুক নারী পুরুষ সেতুর কাজ দেখতে ভির করছে সেতু এলাকায়। ইতোমধ্যে ২৮টি পিলারের মধ্যে ৬টি পিলারের পিয়ার ক্যাপ এবং ২৯০টি পাইলিং এর মধ্যে ১২১টি পাইলিং নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।
২০২০-২০২১ অর্থ বছরের ৬ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পাঁচপীর ও কুড়িগ্রামের চিলমারি উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযোগকারি সড়কে তিস্তা নদীর উপর ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধীত) প্রকল্প অনুমোদন দেয়। ২০১২ সালে তিস্তা সেতু নির্মাণ আলোর মুখ দেখতে শুরু করে। ২০১৪ সালে সেতু নির্মাণ কাজের সুচনা হয়। সিডিউল মোতাবেক ২০২৩ সালে নির্মাণ কাজ শেষ হবার কথা।
পাঁচপীর সেতু সংলগ্ন এলাকা হতে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শহর পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়ী বাঁধটি সেতুর সংযোগ সড়কে রুপান্তের কাজ এবং গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর ধাপেরহাট থেকে পাঁচপীর সেতু পর্যন্ত ৮৩ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের কাজ অনেকটা এগিয়ে রয়েছে। ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাইবান্ধার সার্কিট হাউজে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পাঁচপীরÑচিলমারি তিস্তা সেতু নির্মাণ কাজের ভিত্তি উদ্বোধন করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রামের চিলমারি, রাজীবপুর ও রৌমারী এবং গাইবান্ধা জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল পাঁচপীর চিলমারি তিস্তা সেতুর। ৭৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বরাদ্দে নির্মাণ করার হবে তিস্তা সেতু। এর মধ্যে ২৭৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা মূল সেতু নির্মাণে ব্যয় হবে। সড়ক নির্মাণে ব্যয় হবে ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা, নদী শাসনে ৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা এবং জমি অধিগ্রহণে ব্যয় হবে ৬ কোটি টাকা। সেতুটিতে পিলার থাকবে ৩০টি। এর মধ্যে ২৮টি পিলার থাকবে নদীর ভিতরে অংশে এবং ২টি পিলার থাকবে বাহিরের অংশে। সেতুর উভয়পাশে^ নদী শাসন করা হবে ৩.১৫ কিলোমিটার করে। সেতুর উভয় পাশে^ সড়ক নির্মাণ করা হবে ৮৩ কিলোমিটার। এর মধ্যে চিলমারি মাটিকাটা মোড় থেকে সেতু পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার এবং গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর ধাপেরহাট থেকে পাঁচপীর সেতু পর্যন্ত ৭৭ কিলোমিটার। চিলমারী অংশে একসেস সড়ক সেতু থেকে কাশিম বাজার পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার। এবং গাইবান্ধা ধাপেরহাট থেকে পাঁচপীর পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার। সেতুটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে লালমনির হাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা জেলা থেকে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার কমে যাবে।
উপজেলা প্রকৌশলী শামসুল আরেফিন খান জানান, সেতুর কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে ৬টি পিলারের পিয়ার ক্যাপের কাজ এবং ১২১টি পাইলিং এর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া বোল্টার তৈরির কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।