সড়কটি প্রায় ৬ কিলোমিটার। গাইডওয়াল তৈরি, পিচ উঠে ভেঙেচুরে গর্ত হওয়া স্থান গুলোতে মাটি ভরাট ও কালভার্ট নির্মাণ সহ সড়কটি মেরামতের জন্য প্রায় ১৬ মাস ধরে মাটি খুঁড়ে রাখা হয়েছে। গত ৭ মাস আগে সড়কটির কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৫০ ভাগ কাজও সম্পন্ন হয়নি। এতে সড়কটির কাজ শেষ হওয়া নিয়েও দেখা দিয়ে অনিশ্চয়তা। আর মাটি খুঁড়ে রাখায় প্রায় ১০টি গ্রামের মানুষের সহজ যাতায়াত ব্যাহত হচ্ছে। এলাকাবাসীর এমনই চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার সদর বোনারপাড়া-কচুয়াহাট সড়কটি।
জানা যায়, উপজেলা সদরের জনগুরত্বপূর্ণ বোনারপাড়া-কচুয়াহাট সড়কটি দির্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ভেঙেচুরে যায়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রুরাল কানেকটিভিটি ইমপ্রুমেন্ট প্রকল্পের আওতায় বোনারপাড়া জিসি-কচুয়াহাট আরএইচ রাস্তা পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার ৪ শ’ মিটার সড়কের সংস্কার সহ উন্নয়ন কাজ হাতে নেয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সড়কটি প্রশস্তকরণ, দু’পাশেরর পানি নিস্কাশনের জন্য ৪টি বক্সকালভার্ট, ৪টি ইউড্রেন ও গাইডওয়াল নির্মাণসহ সড়কটি কার্পেটিংয়ের জন্য ৫ কোটি ৬৫ লাখ ৭৩ হাজার ৭৩৬ টাকা বরাদ্দ হয়। কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ১৮ অক্টোবর। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ পায় ঢাকার ধানমন্ডির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স এইচটিবিএল-সিসিসিজেভি নামক একটি কোম্পানী। বিগত ২০২১ সালের জুন মাসে কাজটি সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিলো। কাজ শেষ হওয়ার তারিখ থেকেও অদ্যবদি ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও দৃশ্যমান কোন কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। জানা গেছে, এ পর্যন্ত পুরো সড়কে বক্সবালভাট নির্মাণের জন্য মাটি খঁড়ে রাখা হয়েছে। ইউড্রেন নির্মাণ কারার জন্য রাস্তা কেটে রেখে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার কখনো কাজ শুরু করেন, আবার সবকিছু বন্ধ করে রাখেন। কাজের স্থানে বেরিকেড না দিয়েই কালভার্ট নির্মাণ কাজের রডগুলো সেট করে রাখা হয়েছে। মাঝপথে কাজ বন্ধ রাখায় রাতের আধাঁরে রিক্সা ভ্যান ও সাইকেল যোগে চলাচল করতে গিয়ে এরইমধ্যে মুক্তিনগরের বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম ও আবদুল হামিদ নামের দুইজন আহত হয়েছেন। চরাঞ্চলসহ উপজেলার ১০ ইউনিয়নের মধ্যে সাঘাটা, মুক্তিনগর, হলদিয়া ও বোনারপাড়া ইউনিয়নের হাজার হাজার লোকজন উপজেলার প্রাণকেন্দ্র্র বোনারপাড়ায় আসেন এ সড়কটি দিয়ে। এ রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী বাংলাবাজার এলকার ভ্যানচালক আমজাদ হোসেন তেলিয়ান গ্রামের ভ্যানচালক আকালু মিয়া জানান, এ রাস্তাটি যখন চলাচলের অযোগ্য ছিল, তখন অন্তত কোনমতে যাতায়াত হয়েছে। কিন্তু মাটি খুড়ে গর্ত করে কাজ বন্ধ রাখায় এখন আমাদের কয়েক কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যাতায়াত করতে হয়। মুক্তিনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আহসান হাবিব লায়ন বলেন, সড়কটি দীর্ঘদিন যাবৎ অচল অবস্থায় রয়েছে। তবে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিবেন বলে জানান তিনি। সড়কটির তদারকির দায়িত্বর প্রাপ্ত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহবুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ঠিকাদার ঢাকায় অবস্থান করেন। ওনাদের এই কাজের প্রতি তেমন আগ্রহ না থাকায় একবার কাজ বাতিল হয়েছিলো। এদিকে কাজের মেয়াদকাল শেষ হওয়ায় প্রকল্পের কাজ বাতিলের জন্য অফিস থেকে সংল্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।