এক মুঠ ঘাস উঠালেই তেরে আসত ক্ষেতের মালিক। বিশ্রি ভাষায় করতো গালি-গালাজ। মা-বাপ তুলে গালি দিতেও মুখে বাধতো না। সেই জন্যই মনের মধ্যে খুব শখ থাকলেও বোয়ালমারীর বনমালীতে থাকাকালীন গরু ছাগল পালন করতে পারেন নাই। শুধু গরু ছাগলই নয় হাঁস মুরগি পালনেও ছিল বাধা। কারো বাড়িতে গেলেই ঝগড়া বাধিয়ে দিত। হাঁস মুরগিকে নুলা করে দিত। তাই কোন কিছু না করেই মনে দুঃখ নিয়ে স্বামীর সামান্য উপার্জনেই এতকাল অন্যর জমিতে বাসবাস করত। উপার্জনের আশা থাকলেও এগিয়ে যেতে না পারা নিজের জীবনের কথা জানাচ্ছিলেন সুফিয়া বেগম (৪৩)।
তবে এখন সুফিয়ার ভাগ্যের বদলাতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া জমিসহ ঘর পেয়েছে আলফাডাঙ্গার স্বপ্ন নগরে। এখন ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে অর্থনৈতিক উন্নতির দিকে। গুছিয়ে আনছে নিজের সংসার। সাজিয়েছে নিজের মতো করে একটি খামার। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগির পরিচর্যা করে কেটে যাচ্ছে দিনের অধিকাংশ সময়। নিজে সময়মত না খেলেও ওদের খাওয়াচ্ছে সঠিক সময়ে।
সুফিয়া জানায়, তার অতীতের কষ্টের কথা। বলে বর্তমানের ব্যস্ততার কথা। প্রকাশ করে ভবিষ্যত স্বপ্নের পরিকল্পনা। জানায়, বোয়ালমারীতে কখনো সরকারি খাস জমিতে আবার কখনোবা কারো জমিতে খুপরি তুলে থাকতো স্বামীসহ ৫ ছেলে মেয়ে নিয়ে। স্বামী মিলন মোল্লা নসিমন চালক। তার আয়ে চাল-ডাল-লবন তরকারি কিনতেই সব উপার্জন শেষ হয়ে যেত। তাই সব সময় বাড়তি কিছু উপাজনের চিন্তা করতো সে। কিন্তু নানা বাধায় পারতো না। গত বছর যখন আলফাডাঙ্গার স্বপ্ন নগরে জমিসহ ঘর পায় তখনই শুরু করে স্বপ্নের বাস্তবায়ন। ঘরের পেছন সংলগ্ন এক চিলতে জায়গায় ১০ ফুট পুরাতন টিন কিনে বারান্দা দিয়ে ১টি গাভী পালন শুরু করে। তিন মাস আগে একটি বাছুর দেয় গাভীটি। গাভীর দুধ বেচে ১ টি বকরিও কিনে সে। সেটিও বাচ্চা দিয়েছে। এখন মোট ছাগলের সংখ্যা দাড়িয়েছে ছোট বড় মিলে ৫টি। মুরগিও হাঁস রয়েছে বেশ কয়েকটি।
সবজির অভাব মেটাতে লাউ আর সিম গাছ রোপন। এসবের পরিচর্যা করেই তার দিন কেটে যায়। আগামীতে সে তার গরু ছাগলের খামারটিকে আরো বড় করবে বলে জানায়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অতুল সরকারকে ধন্যবাদ জানান তাকে জমিসহ ঘর দেয়ায়। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আলফাডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসনকে নিয়মিত তার খোঁজ খবর রাখার জন্য।