নদীটিতে বছরের প্রায় অধিকাংশ সময়ই পানি থাকতো। জেলেদের সারিবদ্ধ মাছ ধরার দৃশ্য যে কারও মন কারতো। এলাকার মানুষের ব্যবসা-বানিজ¦্য ও যাতায়াতে চিরচেনা নদীর দু কুলে ছিলো প্রাণের উচ্ছাস। এখন আর সেদিন নেই। কালের পরিক্রমায় গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ও পাশের তিন উপজেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া সেই বাঙালি নদী হারিয়ে ফেলেছে তার আপন স¦কীয়তা। এখন নদীর বক্ষে নানা ফসলের আবাদ হয়। খরস্রোতা নদীটি এখন খালে পরিনত হয়েছে।
জেলার তিস্তামুখ নদী অববাহিকা থেকে বাদিয়াখালীর উপর দিয়ে পদুমশহর, ভুতমারা, দুর্গাপুর, গোবিন্দগন্জ উপজেলার তেতুলতলি, এলাসেরঘাট, কাটাখালী, মহিমাগন্জ, বাঙাবাড়ী, জালালতাইর, চন্দনপাট, ওসমানেরপাড়া, কামালেরপাড়া সহ বাঙালীর তীরবর্তি এলাকায় প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে নদীর আকার। জৌলুস হারিয়ে কোন কোন স্থানে মরা খালে পরিনত হয়েছে। এখন চৈত্র মাস পরার আগেই নদী হয়ে যায় পানি শুন্য। যে নদী থেকে পানি তুলে চার পাশের জমিতে চাষাবাদ হতো, সেখানে পড়ে আছে ধু ধু বালির স্তর। নদীর তলদেশে সামান্ন পানি থাকলেও তার বুক চিরে ফসলের চাষে তা ঢেকে পড়েছে। নদীর সামান্ন এলাকায় এখন পানি থাকে। গভীরতা বলতে আর কিছু নেই। নদীর বেশির ভাগেই এখন চর পড়ে সমতল ভুমির ন্যায় হয়েছে। এসব এলাকায় এখন সবুজ ফসলের সমারোহ। বোরো ধান, মিষ্টি আলু, বাদাম, আখ, ভুট্টা, বিভিন্ন জাতের ডাল, মরিচ ও শাক-সবজি চাষ হচ্ছে নদীর অববাহিকায়। কোথাও নদীর তলদেশ থেকে শুরু করে উপর পর্যন্ত মাঠের ন্যায় পরিনত হয়েছে। সবুজ ফসলের সমারোহ দেখে মনেই হবেনা এটি একটি নদী। এভাবেই আলাই-বাঙালি নদী যেন হারাতে বসেছে তার আপন স্বকীয়তা। নদীপাড় এলাকা দলদলিয়া গ্রামের কৃষক সুশান্ত চন্দ্র জানান, আস্তে আস্তে ভরাট হয়ে যাওয়ায় এখন চাষাবাদ হচ্ছে নদীর বুক চিরে। দূর থেকে দেখলে এখন আর নদী মনে হয় না বলেও জানান তিনি। ২০ বছর আগেও সব সময় নদীতে পানি থাকতো। নদীর গভীরতা কমে আসায় এ অবস্থা বলে জানালেন, কচুয়া এলাকার কৃষক আবদুস সামাদ। এ ব্যাপারে কথা হলে কচুয়া ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খন্দকার জানান, নদীর গভীরতা বাড়াতে আগামীতে সরকারী ভাবে চেষ্টা করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরদার মোস্তফা শাহীন বলেন, শুষ্ক মৌসুমে পানি না থাকা এসব নদী খননের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।