মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে ধরে রাখতে
শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ীর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজরিত সোহাগপুর
বিধবাপল্লীতে নবনির্মিত 'সৌরজায়া' স্মৃতিসৌধের উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার
(১৯ জানুয়ারী) দুপুরে জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশীদ ফিতা কেটে এর উদ্বোধন
করেন।
এসময় স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ তোফায়েল
আহমদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ফরিদা ইয়াছমিন, নালিতাবাড়ীর
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা
হেলেনা পারভীন, সহকারী কমিশনার (নেজারত) সাদিক আল শাফিন, সহকারী কমিশনার
(শিক্ষা ও কল্যাণ) সানাউল মোর্শেদ, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল
হান্নান ও ইউপি চেয়ারম্যান নিয়ামুল কাউছার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে
জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে সোহাগপুরের বীর জায়াদের মাঝে ১০ কেজি করে চাল,
১ কেজি মশুর ডাল, ১ কেজি লবন, ১ কেজি চিনি, ২ কেজি চিড়া, ১ লিটার
ভোজ্যতেল ও নুডুলস দেওয়া হয়। এ ছাড়া জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশীদ জীবিত ২২
জন বীর জায়াদের এক বছরের খরচের জন্য চাল-ডালসহ অন্যান্য সামগ্রী দেওয়ার
ঘোষনা দেন।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মোমিনুর রশীদ বলেন, যাদের আত্মত্যাগে বাংলাদেশ
স্বাধীন হয়েছে, আমরা স্বাধীন দেশের সুফল ভোগ করছি। সেই মুক্তিযুদ্ধে
নিহতদের স্মরণ ও স্মৃতিকে চির স্মরনীয় করে রাখতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে
নিজস্ব অর্থায়নের এই ‘সৌরজায়া’ স্মৃতি সৌধটি নির্মান করা হয়েছে। এতে নতুন
প্রজন্ম মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই নালিতাবাড়ী উপজেলার কাকরকান্দি ইউনিয়নের
সীমন্তবর্তী সোহাগপুর গ্রামে পাক হানাদার বাহিনী তাদের এ দেশীয় দোসরদের
সহায়তায় প্রায় ছয় ঘন্টার তান্ডব চালায়। এ তান্ডবে গুলি করে ও বেয়নেট দিয়ে
খুঁচিয়ে ১৮৭ জন পুরুষ মানুষকে হত্যা করে। এ সময় ওই গ্রামের ৬২ জন নারী
বিধবা হন এবং তাঁদের মধ্যে ১৪ জন নারী পাশবিক নির্যাতনের শিকার হন। এরপর
থেকেই সোহাগপুর গ্রামটি বিধবাপল্লী নামে পরিচিতি লাভ করে।