অন্যদিনের চেয়ে আজকের সকালটা একটু ভিন্নটা কাটলো মিয়া মো. আবদুল মতিনের। ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের সৈনিকের বাড়িতে সাত সকালে গিয়ে হাজির হয় ৫২ দৌঁড়বিদ। ভাষা সৈনিকের সঙ্গে তারা আড্ডা দিলো, শুনলো বাংলা ভাষা আন্দোলনের গল্প। ফুলের তোড়া, ক্রেস্ট, নগদ অর্থ দিয়ে ও উত্তরীয় পড়িয়ে ভাষা সৈনিককে দেওয়া হলো সম্মান।
আয়োজনটা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলা মনিয়ন্দ ইউনিয়নের টনকি গ্রামে। আখাউড়া রানার্স নামে একটি সংগঠনের ডাকে সাড়া দিয়ে সোমবার সকালে প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ দৌঁড়ে গিয়ে ভাষা সৈনিককে সম্মান জানান ৫২ জন দৌঁড়বিদ। আয়োজনটি বেশ প্রশংসা কুড়ায়।
সকাল ছয়টা ৪০ মিনিটে আখাউড়া শহীদ স্মৃতি ডিগ্রী কলেজ মাঠের শহীদ মিনারের সামনে থেকে দৌঁড় শুরু করা হয়। আখাউড়া-কসবা সড়ক হয়ে ৫২ জন দৌঁড়বিদ ছুটে যান ভাষা সৈনিক মিয়া মো. আবদুল মতিনের বাড়িতে। সকাল আটটার দিকে সবাই মিয়া মতিনের বাড়িতে গিয়ে পৌঁছেন। মিয়া মতিনের বাড়ির উঠানেই আয়োজন করা হয় সংবর্ধনা ও গল্প শুনা অনুষ্ঠানের।
মিয়া মতিন তাঁর আলোচনায় বলেন, ‘দশম শ্রেণির ছাত্র থাকা অবস্থায় ভাষা আন্দোলনের সংগ্রামে যোগ দেন। মোগড়া উচ্চবিদ্যালয় থেকে মিছিল বের করার নেতৃত্বে ছিলেন তিনি। এ কারণে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’
পরে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এমন আয়োজন তাকে মুগ্ধ করেছে। তরুণ প্রজন্মের এমন উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। আমাকে স্থানীয়ভাবে সংবর্ধনা দেওয়া হলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি না পাওয়ার বিষয়টি পীড়া দেয়।’ বাংলা ভাষা পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন কালের কণ্ঠের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ পাল বাবু, ভোরের কাগজের আখাউড়া প্রতিনিধি জুটন বনিক,ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. রেজাউল ভূইয়া, গ্রামবাসীর পক্ষে মো. মানিক ভূইয়া, দৌঁড়বিদদের পক্ষে মো. কাউছার হোসেন, আয়োজকদের পক্ষে মারিয়াম তাবাসসুম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন আখাউড়া রানার্সের অ্যাডমিন সানজাদ মাহমুদ নিবিড়।
আয়োজকরা জানান, জাতীয় দিবসসহ বিভিন্ন সময়ে তারা এমন ব্যতিক্রম আয়োজন করে থাকেন। এর আগে বিজয় দিবসে সাত কিলোমিটার পথ দৌঁড়ে গিয়ে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামালের সমাধিতে সাত বীরশ্রেষ্ঠের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এবারের আয়োজনে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ ধরণের আয়োজন তারা অব্যাহত রাখতে চান।