হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত হয়েছে।
কর্মসূচির মধ্যে ছিল সোমবার সূর্যোদয়ের সাথে প্রশাসনিক ভবনের সম্মুখে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতভাবে উত্তোলন, সকাল ৮.১৫মিনিটে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড.এম. কামরুজ্জামান-এর নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা কালো ব্যাচ ধারণ করেন এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ক্রমান্বয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন শিক্ষক, কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (হাবিপ্রবি শাখা)-এর নেতৃবৃন্দ, কর্মচারীসহ বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
এরপর শহিদ মিনার প্রাঙ্গনে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে ভাইস-চ্যান্সেলর এর বাণী বিতরণ করা হয়।
বাণীতে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড.এম. কামরুজ্জামান বলেন, আমি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি ভাষা শহিদ রফিক, শফিক, বরকত, সালাম, জব্বারদের প্রতি যাঁরা মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পাকিস্তানী শাসকদের বুলেটে ঢাকার রাজপথে আত্মদান করেছিলেন। বিন¤্র চিত্তে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি ভাষা আন্দোলনের অন্যতম রূপকার স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যিনি সারা জীবন বাংলা ভাষা ও বাঙালির অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার জন্য সংগ্রাম করেছেন। শ্রদ্ধার সাথে আরও স্মরণ করছি জীবিত ও প্রয়াত ভাষা সৈনিকদের প্রতি যাঁরা বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার বিভিন্ন আন্দোলন, সংগ্রামে অবদান রেখেছিলেন ও কারাবরণ করেছিলেন এবং আজও বাংলা ভাষার জন্য স্ব স্ব অবস্থানে থেকে বিভিন্নভাবে অবদান রেখে চলেছেন। বাঙালির গৌরব ও গর্বের একুশে ফেব্রুয়ারি এখন পৃথিবীর সকল জাঁতি গোষ্ঠীর মাতৃভাষার অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দিন হিসেবে স্বীকৃত এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে সারা বিশে^ উদযাপিত হচ্ছে। বিশ্ববাসীর কাছে একুশ এখন ন্যায় সঙ্গত অধিকার আদায়ের অনন্ত প্রেরণার উৎস। প্রসঙ্গত বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার কার্যকর ভূমিকায় ইউনেস্কোতে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস করার প্রস্তাব উত্থাপিত হয়ে গৃহিত হয়েছিল। বিশ্বের সব ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য তিনি ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছেন যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার উপর গবেষণা কার্যক্রম চলছে। বঙ্গবন্ধু কন্যার এই অনন্যসাধারণ ভূমিকার জন্য তাঁর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই।
পরে টিএসসিতে শিশুদের (প্রাক প্রাথমিক শ্রেণি, ১ম-২য় শ্রেণি এবং ৩য়-৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী) চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য “বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধে ভাষা আন্দোলনের প্রভাব” শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। সোমবার সকাল ১১টায় ওইসব প্রতিযোগিতাসমূহের বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
বাদ জোহর বঙ্গবন্ধু, ভাষা শহিদ ও সকল শহীদদের স্মরণে হাবিপ্রবির কেন্দ্রীয় মসজিদে বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।