কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটিতে নির্যাতিত, যোগ্য, জেষ্ঠ্য ও ত্যাগিদের বাদ দিয়ে নিষ্ক্রিয়, অযোগ্য, অপরিচিত ও বিএনপি-জামায়াতের ব্যক্তিদের দিয়ে কমিটি করার প্রতিবাদে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রসহ ১০জন নেতা একযোগে পদত্যাগ করেছেন।
গত সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে সংবাদ সম্মেলন করে তারা এই পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
কমিটি থেকে পদত্যাগকারীরা হলেন, পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ মো. রফিকুল ইসলাম রেনু, উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেক সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. হুমায়ূন কবীর, পাকুন্দিয়া পৌরসভার মেয়র মো. নজরুল ইসলাম আকন্দ, জেলা শ্রমিকলীগের উপদেষ্টা আতাউল্লাহ সিদ্দিক মাসুদ, পাটুয়াভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহাব উদ্দিন, চন্ডিপাশা ইউপি চেয়ারম্যান মো. শামছুদ্দিন, নারান্দী ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম, একই ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. মোসলেহ উদ্দিন, চরফরাদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শাহাব উদ্দিন ও বাহাদিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহাব উদ্দিন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন, উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রেনু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. হুমায়ূন কবীর, পাকুন্দিয়া পৌরসভার মেয়র মো. নজরুল ইসলাম আকন্দ, জেলা শ্রমিকলীগের উপদেষ্টা আতাউল্লাহ সিদ্দিক মাসুদ, পাটুয়াভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহাব উদ্দিন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. সোহরাব উদ্দিন কমিটি গঠনের পর থেকেই দল বিরোধী কর্মকা-ে লিপ্ত রয়েছেন। সদ্য সমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন পেয়ে দেওয়ার কথা বলে দলের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ছাড়া দল মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে নির্বাচনে কাজ করেছেন। দলের ত্যাগি, পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে তার ব্যক্তি স্বার্থে বিএনপি জামায়েতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি, কুখ্যাত ডাকাত ও গরু চোরদের দিয়ে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি দিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের অপমান অপদস্থ করা হয়েছে। এজন্য আমরা একযোগে ১০জন নেতা এ কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছি। কয়েকদিনের মধ্যে আরও ৪০জন নেতাকর্মী এই কমিটি থেকে পদত্যাগ করবেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মিছবাহ উদ্দিন, সুখিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হামিদ টিটু, এগারসিন্দুর ইউপি চেয়ারম্যান নূরুজ্জামান বাবু ও চরফরাদী ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মান্নানসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ালীগৈর আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. সোহরাব উদ্দিন এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জ-২ (পাকুন্দিয়া-কটিয়াদী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. সোহরাব উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে ৬৭ সদস্যের পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেয় জেলা আওয়ামীলীগ। এরপর থেকেই এ কমিটি বাতিলের দাবীতে দফায় দফায় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে আসছে বর্তমান সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদের সমর্থক নেতাকর্মীরা। এর অংশ হিসেবে গত সোমবার ১০ নেতাকর্মী এ কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন।