এখন ফাল্গুন মাস। গাছে গাছে শিমুল ফুলের সমারোহ। পাখির কলতানে মুখরিত দশদিক। গ্রামে গ্রামে এক সুঘ্রানে বিমোহিত সব।
কালীগঞ্জ উপজেলা জুড়েই শিমুল ফুলের লাল পাপড়ি মেলে সৌন্দর্য বিলাচ্ছে। দূর থেকে হঠাৎ দেখলে মনে হবে কেউ লাল গালিচা বিছিয়ে রেখেছেন। গাছজুড়ে টকটকে লাল শিমুল ফুল। সুবাস না থাকলেও সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন সবাই। গাছ গুলোতে পাখপাখালি আর মৌমাছিদের আনাগোনা চোখে পড়ার মত। তবে এ অপরূপ সাজ সজ্জিত শিমুল গাছ ও ফুল প্রায় বিলুপ্তির পথে। ফাল্গুনের শুরুতে গাছে সীমিত আকারে ফুল ফোটে। ফাগুনের আগুন মানেই যেন শিমুল ফুল। ডালে ডালে লাল আগুন ছড়িয়েই জানান দেয় বসন্তের আগমন। নিঃসঙ্গ পথের পাশে শিমুলের গাছ যেন অনন্য সৌন্দর্য। যুগে যুগে শিমুল ফুল নিয়ে গান, গল্প, কবিতা লিখেছেন অনেক সাহিত্যিক। বাংলাদেশে এমন কোনো অঞ্চল নেই যেখানে শিমুল ফুলের দেখা মেলে না। শিমুল গাছে নজর দিলেই মনে হবে লাল গালিচা বিছানো। ওই দৃশ্য চোখে পড়লে যে কেউ মুগ্ধ হতে বাধ্য।
তবে স্থানীয় লোকজন জানান, কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীন এই ঐতিহ্য। প্রাকৃতিক ভাবে জন্মানো শিমুল গাছ থেকে প্রাপ্ত তুলা দিয়ে লেপ-তোষক ও বালিশ বানানো হয়। এগুলো ব্যবহার যেমন আরামদায়ক তেমন স্বাস্থ্যসম্মত। শিমুল গাছ সংরক্ষণে সরকারি ভাবে কোনো কার্যক্রম নেই। জনসচেতনতার অভাবে ক্রমেই হারিয়েই যাচ্ছে শিমুল গাছ।
রামনগর গ্রামের মহিদুল ইসলাম বলেন, একসময় ছিল ২১শে ফেব্রুয়ারী আসলে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার জন্য শিশু-কিশোরদের ফুলের সংকট দেখা যেতো। ফুল না পেয়ে শৈশবে অনেকেই লাল টকটকে শিমুল ফুল দিয়ে ফুলের তোড়া বানিয়ে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতো। আজকাল শিশুরা শিমুল গাছ ও ফুলও চেনে না। শিমুল গাছ বিলুপ্তির কারণে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে স্বাস্থ্যসম্মত তুলা থেকে। তবে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন নির্বিচারে শিমুলগাছ নিধন ও চারা রোপণ না করার কারণে এ অঞ্চল থেকে শিমুল গাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।এ ব্যাপারে সরকারি নজরদারি বাড়ানো দরকার।