জেলার শ্রীবর্দী, নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী
উপজেলায় রয়েছে ৩৬ কিলোমিটার বনভূমি। এই বনভূমিতে বিচরণ করে থাকে ৭০ থেকে
৮০টি হাতি। হাতিগুলো ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে খাবারের সন্ধানে হামলা চালায়
এই তিন উপজেলার গারো পাহাড়ের বাড়িঘর, ধানক্ষেত এবং বিভিন্ন ফল-ফসলের
বাগানে।
বন বিভাগ এবং এলাকাবাসীর তথ্যমতে, ২ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই ২০
দিনে ১০টি বাড়ি, একটি মন্দির, একটি পাহারা চৌকি, ৩ একরের মাল্টা ও ড্রাগন
ফলের বাগান, ৫ একরের তুলার প্রজেক্টে তা-ব চালিয়েছে হাতির দলটি।
শেরপুর জেলা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ অফিস জানায়, গারো পাহাড়ের গভীর অরণ্যে
খাবার না থাকায় লোকালয়ে নেমে আসে হাতি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামের
মানুষ।
স্বদেশ এগ্রো লিমিটেডের (তুলার প্রজেক্ট) স্বত্বাধিকারী প্রকৌশলী
আব্দুল্লাহ আল আমিন জানান, ২০ লাখ টাকা খরচ করে আমি এই কাপাস তুলার
প্রজেক্ট করেছি, হাতির আক্রমণে আজ আমার সব শেষ।
অন্যদিকে মালটা ও ড্রাগন বাগান মালিক ঝর্না বেগম বলেন, আমার স্বামী
অসুস্থ আমি খুব কষ্ট করে ৩ একর জায়গায় মালটা ও ড্রাগন ফলের বাগান
করেছিলাম। হাতি এসে আমার বাড়িঘর এবং বাগান ধ্বংস করে দিয়েছে।
একই গ্রামের ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার গোলাপ হোসেন বলেন, আমার এই চার গ্রামে এক
মাস থেকে প্রতি রাতে হাতির তা-ব চলছে। এতে বাড়িঘর, ফল-ফলাদির বাগান,
ধানক্ষেত নষ্ট হচ্ছে। এক মাসে হাতি আমার চার গ্রামে প্রায় ২০ থেকে ২৫ লাখ
টাকার ক্ষতি করেছে।
তুলার প্রজেক্টে হাতি এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ ক্ষতি করেছে। আমরা শুনে
ছিলাম হাতির অভয়ারণ্য এবং সোলার ফ্যান্সিং হবে। যদি এটা হতো তাহলে
মানুষের জানমালের ক্ষতি হতো না।
রাংটিয়া রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা মকরুল ইসলাম বলেন,
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি প্রকল্পের মালিকদের কাছ থেকে আবেদন পেলে তাদেরকে
সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রুহুল আমীন বলেন, হাতির আক্রমণ
ঠেকাতে সোলার ফ্যান্সিংয়ের টেন্ডার হয়েছে এবং অল্প কয়েক দিনের মধ্যে
কার্যাদেশ দেওয়া হবে এবং হাতির জন্য অভয়ারণ্যের ঘোষণাও দেওয়া হবে।