কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর নারায়নপুরের সহিংস ঘটনায় মারা গেছে আহত ৩ মাসের শিশু আল-মামুন। টানা ৭২ ঘন্টা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বাবা-মায়ের কোল খালি করে বুধবার সে চলে গেছে পরপারে। শিশুপুত্রকে হারিয়ে এখন পাগলপ্রায় মা মনোয়ারা বেগম।
মৃত্যু শিশু আল-মামুনের মরদেহ বুধবার সন্ধ্যায় উদ্ধার করে কচাকাটা থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ কুড়িগ্রাম মর্গে পাঠানো হয়।
২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন নারায়নপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ঝাউকুটি গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আমজাদ হোসেন, তার মামা রিয়াজুল ইসলামের প্রায় ৭০-৮০ জন মানুষ লাঠিসোটা ও দেশিয় অস্ত্র নিয়ে একই গ্রামের নুরইসলাম, সাবেক ইউপি সদস্য আবু হানিফ, সাবেক ইউপি সদস্য মোন্নাফ পক্ষের আমিনুলেরসহ ৩০টি বাড়িতে অতর্কিতে হামলা চালায়। ব্যাপক ভাংচুর করে। লুট করে নিয়ে যায় বাড়ির সবকিছু। বেধরক পিটিয়ে আহত করে ১৬ জন শিশু-নারী-পুরুষকে। আগুন ধরিয়ে দেয় আব্দুসসালামের বাড়িসহ ৩টি বাড়িতে।
মৃত্যু শিশুর পরিবারের দাবী হামলা ও অগ্নিসংযোগের সময় প্রাণভয়ে ৩ মাসের শিশু আল-মামুনকে বুকে জড়িয়ে রুদ্ধশ্বাসে দৌড় দেয় আমিনুলের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (২০)। অন্ধকারে জমির আইলে হোচট খেয়ে মাটিতে পড়ে যায় সে। এতে প্রচন্ড আঘাত পায় শিশুটি। ধীরে ধীরে তার অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। পরে বুধবার ভোরে শিশুটি মারা যায়।
এদিকে বুধবার সকালে নুর আমিন বাদী হয়ে বাড়ি-ঘর ভাংচুর, লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ ও মারপিটের ঘটনায় কচাকাটা থানায় ৪০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। অপরদিকে শিশু আল-মামুনের মৃত্যুতে একটি সাধারণ ডায়রী করে পুলিশ।
কচাকাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম জানান, বাড়ি-ঘর ভাংচুর, লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগ ও মারপিটের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। শিশু মৃত্যু নিয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকলেও যেহেতু তা ঘটনা সংশ্লিস্ট তাই জিডিমুলে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।