৭ বছরের শিশু রেহান। তার শরীরের সকল অঙ্গ ঠিক থাকলেও অস্বাভাবিক ডান হাতের আঙুল গুলো। আঙুল ফুলে মোটা হয়ে গেছে। ওজন এখন দেড় কেজি। যা স্বাভাবিকের তুলনায় চারগুন বেশি। অন্য সব শিশুর মত ডান হাত দিয়ে কোন কিছু করতে পারে না সে। এমনই ভাবে শিশু ছেলের শরীরে অজানা এক রোগ বয়ে নিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের প্রহর গুনছে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার সুজালপুর গ্রামের অসহায় রিক্সাচালক আবদুল হাই। উন্নত চিকিৎসার জন্য তার পাশে দাঁড়াতে সবার প্রতি আকুতি জানিয়েছেন, শিশু রেহানের বাবা-মা।
উপজেলার কামালেরপাড়া ইউনিয়নের সুজালপুর গ্রামের আবদুল হাই ও রেহেনা বেগম দম্পতির প্রথম ছেলে রেহাকুল ইসলাম রেহান। ২০১৫ সালে শিশুটির জন্মের পর থেকে ডান হাতের আঙুল গুলো আকারে বড়। স্থানীয় জান্নাতুন নাইম সালাফিয়া ও হাফিজিয়া মাদরাসায় পড়ে সে। দিন দিন বড় হওয়ার সাথে হাতের আঙুল গুলোও বড় হতে থাকে তার। শিশুটির বাবা ঢাকায় রিক্সা চালায়। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। স্বল্প আয়ের সংসারে শিশু রেহানের চিকিৎসার চেষ্টা করেও কোন সুফল হয়নি। এখন যত দিন যাচ্ছে, তত রেহানের চলাফেরায় কষ্ট বাড়ছে। কথা হলে শিশু রেহান জানান,“আমার বন্ধুরা যা করতে পারে আমি করতে পারি না। হাতের ওজন বেড়ে যাওয়ায় আমি ভালোভাবে চলাফেরা করতে পারিনা। আমার বাবা-মার টাকা নেই। তাই চিকিৎসা করাতে পারেনা। ডান হাতের সবগুলো আঙুল ফুলে যাচ্ছে। কেউ যদি আমার পাশে দাঁড়ান, চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন, তাহলে আমি আমার বন্ধুদের মতোই চলতে পারবো।” রেহানের মা রেহেনা বেগম জানান, আমি পরের বাড়িতে কাজ করে খাই। আমার স্বামী ঢাকায় রিক্সা চালায়। অভাবেব সংসারে ছেলে রেহানের চিকিৎসার খরচ চালানো অসম্ভব। এখন ছেলে ভবিষৎ চিন্তায় আছি। এখন যদি কেউ আমার ছেলের চিকিৎসার দায়িত্ব নিতো তাহলে আমার ছেলে আশার আলো দেখতো। একই গ্রামের যুবক আকাশ মিয়া জানান,“আমি রেহানের হাতের অবস্থা দেখে আশ্চর্য হয়েছি। সমাজের অনেক বৃত্তবান ব্যক্তি আছে। মানবতার সেবায় এগিয়ে এসে রেহানের চিকিৎসার করালে বাচ্চাটা হয়তো স্বাভাবিক জীবতে ফিরতে পারবে।”স্থানীয় জান্নাতুন নাইম সালাফিয়া ও হাফিজিয়া মাদরাসায় মুহতামিম (পরিচালক) আবদুল বারী জানান, আমার মাদরাসার ছাত্র রেহান। তার প্রতিভা অন্য শিশুদের চেয়ে ভাল। কিন্তু তার হাতের আঙুল গুলো যেভাবে বেড়ে চলছে, আগামীতে তার চলাফেলা অসম্ভব হয়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারে জানতে সাঘাটা উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মানিক চন্দ্র রায়ের সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে বলেন, প্রতিবন্ধিদের চিকিৎসার জন্য সমাজ সেবা অধিদপ্তর থেকে প্রাথমিক ভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ আছে। জেলার বাহিরে চিকিৎসা বা চিকিৎসার জন্য আর্থিক ভাবে কোন সহযোগিতার সুযোগ নেই।