বগুড়ার সারিয়াকান্দির যমুনা চরের ঘাস বেচে সংসার চালান রহিম আলী হুইল। রহিম আলী হুইল সদর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের চর বাটিয়া গ্রামের শাহার আলীর ছেলে। তার বয়স প্রায় ৪২। স্ত্রী আছিয়া ও দুই ছেলে সন্তানকে নিয়ে সংসার তার। স্থানীয়রা জানান, রহিম আলী হুইল সহজ-সরল ও নরম প্রকৃতির একজন মানুষ। চরে অনেক রকমের কৃষি কাজ রয়েছে কিন্তু সে সব কাজে আগ্রহি হয়ে ওঠেনা রহিম আলী হুইল। পরিত্যাক্ত জায়গা-জমিতে প্রাকৃতিভাবে অনেক রকমের ঘাস হয়ে থাকে। এ ছাড়াও বড় ধরনের চারন ভূমি রয়েছে চরে। এ ধরনের ভূমির ঘাস সাধারণত গরু, মহিষ, ভেড়া, ছাগল খেয়ে থাকলেও অনেক স্থানে ওই সহ পশুর নাগালের বাইরে থেকে যায় ঘাসের জায়গা। চরের এসব জায়গা থেকে প্রতিদিন ঘাস তোলেন রহিম আলী হুইল। সকালে ঘাস তোলার পর দুপুরে তা নিয়ে আসেন সারিয়াকান্দি বাজারে বিক্রি করতে। সন্ধায় বাজায়-সদাই করে বাড়ী ফিরেন তিনি। বাড়ি থেকে বাজার প্রায় ৩ কিলোমিটার দুরে। পথের মধ্যে একটি নৌ-ঘাট রয়েছে। নৌ-পথ পাড়ি দিয়ে কাঁধে ঘাসের ভাড় নিয়ে ছুটে আসেন তিনি সারিয়াকান্দির ঘাসের বাজারে। বৃষ্টি-বাদল কোন কিছুই তাঁর কাছে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়না। ঘাস বিক্রি করতে না পারলে তার চুলায় হাড়ি ওঠেনা। পরিবারে স্ত্রী ও দুই সন্তানের মুখে আহার জোটাতে নিত্য দিনকার সংগ্রাম এটি। রহিম আলী হুইল বলেন, এ ছাড়া আমি আর কি করবো? চরে অনেক কাজ আছে ঠিকই, কাজে অনেক লোকের দরকারও পরে, কিন্তু সেসব কাজে ডাক পড়েনা আমার। যার জন্য বাধ্য হয়ে এটাকে পেশা হিসেবে বেঁছে নিয়েছি। আমি সাধারণত চরের জমি থেকে দুর্বা ঘাস তুলে থাকি। এ ঘাসের চাহিদা বাজারে অনেক। প্রাকৃতিভাবে চরে জন্মে থাকে এ ঘাস। এক ভাড় ঘাস বেচে আমি পাই, আড়াই থেকে তিন’শ টাকা পর্যন্ত। এতে ভালোই চলে আমার সংসার। উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মো: নাইম হোসেন বলেন, সমাজে অনেক রকমের লোক হরেক রকমের কাজকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। খোঁজ-খবর নিয়ে দেখা হবে, যদি রহিম আলী হুইলকে সরকারীভাবে কোন সাহায্য সহযোগিতা করা হয় তবে আমার তা করবো।