সুনামগঞ্জে হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন না করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দল সুনামগঞ্জ জেলা কমিটি। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আনিসুল হকের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মো. আবদুল ওয়াদুদের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম নূরুল।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চলতি মৌসুমে জেলার ১২টি উপজেলার বিভিন্ন হাওরের বোরো ফসলের সুরক্ষার জন্য ৭২৪টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মাধ্যমে ১৩০টি ঝুঁকিপূর্ণ ক্লোজারসহ ৫৩২ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এজন্য সরকার ১১৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী ১৫ ডিসেম্বর বাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। মৌসুম শেষ পর্যায়ে এসেও মাত্র ৫৫ থেকে ৬০ ভাগ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এ ছাড়া বেশিরভাগ বাঁধে ঘাস লাগানো হয়নি, করা হয়নি দুর্মুজ। ডিজাইন অনুযায়ী বাঁধের স্লোপ দেওয়া হয়নি। গোড়া থেকে মাটি কেটে অনেক বাঁধ নির্মাণ করায় সেগুলো দুর্বল হয়েছে। এর সবই কৃষকদের উদ্বেগের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, সংশোধিত কাবিটা নীতিমালা অনুযায়ী হাওরে জমি রয়েছে এমন কৃষকদের দ্বারা গঠিত প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মাধ্যমে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করার কথা। নীতিমালা সংশোধনের পর থেকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এর ব্যত্যয় ঘটে চলছে। প্রকৃত কৃষকদের পরিবর্তে সংসদ সদস্যগণ ও প্রভাবশালীদের ইচ্ছে অনুযায়ী তাদের পছন্দের দলীয় নেতাকর্মীদের দ্বারা পিআইসি গঠন করা হচ্ছে। ফলে অনিয়ম, দুর্নীতি করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিগত দিনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কাবিটা নীতিমালার দুর্বলতা, বাস্তবায়নের প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে কৃষকসহ সকল পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে পুর্নমূল্যায়ন চায় কৃষক দল।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. রেজাউল হক, দপ্তর সম্পাদক জামাল উদ্দিন বাকের, জেলা কৃষক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী আকুল আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মোনাজ্জির হোসেন, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হাসান রাজু, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।