এবার তরুণ বয়সীদের উপর নিজস্ব প্ল্যাটফর্মের সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে তদন্তের মুখে পড়েছে টিকটক। অল্প সময়ে বাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করা সামাজিক মাধ্যমটির প্রভাব তদন্তে মাঠে নেমেছেন যুক্তরাষ্ট্রের আটটি অঙ্গরাজ্যের প্রধান আইন কর্মকর্তারা। জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপটি তরুণ বয়সীদের শারীরিক বা মানসিক ক্ষতির কারণ হচ্ছে কি না, সেটি তদন্ত করবে যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রতিনিধিদের একটি দল যেখানে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাই থাকবেন। তরুণ বয়সীদের উপর কোনো ক্ষতিকর প্রভাবের বিষয়ে টিকটকেরর জানা ছিল কি না, বা প্রতিষ্ঠানটি জেনেশুনে ক্ষতিকর ব্যবসা কৌশল অব্যাহত রেখেছে কি না- এ প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজবেন তদন্তকারীরা। ম্যাসাচুসেটস-এর অ্যাটর্নি জেনারেল মাউরা হিলি’র কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “আরো বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি, তরুণ বয়সীদের হাতে প্ল্যাটফর্মটির ব্যবহার বাড়াতে টিকটক যে পদ্ধতি ও কৌশলগুলো ব্যবহার করেছে তার উপর গুরুত্ব দেবে এই তদন্ত।” তবে, চীনের প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন টিকটক এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা “কম বয়সী ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা”র উপর জোর দেয় এবং বয়সভেদে বিভিন্ন ফিচারে প্রবেশাধিকার এবং ব্যবহার সীমিত করে দেয়। বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে “কিশোর বয়সীদের জন্য আমাদের অনেকগুলো নিরাপত্তা এবং গোপনতা ফিচার আছে; এ বিষয়ে তথ্য সরবরাহ করতে আমরা সানন্দে প্রতীক্ষা করছি।” ফেব্রুয়ারির শুরুতেই প্রতিষ্ঠানটি বলেছিল, বয়সের ভিত্তিতে কনটেন্টের শ্রেণিবিন্যাস এবং বিধিনিষেধ আরোপের প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করছে তারা। প্রাপ্তবয়স্ক ব্যবহারকারীদের জন্য তৈরি ভিডিও কনটেন্ট যেন অপ্রাপ্তবয়স্কদের কাছে না পৌঁছায়, সেটি নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। তরুণবয়সীদের উপর ফেইসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা’র সেবাগুলোর বিরূপ প্রভাব তদন্তে ইতোমধ্যেই মাঠে নেমেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলরা। বিশেষ করে ইনস্টাগ্রাম নিয়ে বিপাকে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি। মেটা’র বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তরুণ বয়সীদের উপর ইনস্টাগ্রামের বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে জানা থাকলেও পুরো বিষয়টি মুনাফার লোভে অগ্রাহ্য করে গেছে সামাজিক যোগাযোগের শীর্ষ মাধ্যমটি। টেনেসি’র অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, তদন্তকারী দলটিতে আছেন ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা, কেনটাকি, ম্যাসাচুসেটস, নেব্রাস্কা, টেনেসি এবং ভারমন্টের অ্যাটর্নি জেনারেলরা; সঙ্গে আছেন আরো অনেকে। মঙ্গলবার ‘স্টেট অফ দ্য ইউনিয়ন’-এ দেওয়া বক্তব্যে সামাজিক মাধ্যমগুলোর ক্ষতিকর প্রভাবের প্রসঙ্গ টেনেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জনপ্রিয় অ্যাপগুলোর কারণে মহামারী শুরু হওয়ার আগে থেকেই শিশুরা “ভুগছিল” বলে মন্তব্য করেন তিনি। শিশুদের গোপনতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আরো কঠোর নীতিমালা এবং শিশুদের বিজ্ঞাপনী ‘টার্গেট’-এ পরিণত করা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বাইডেন বলেন, “মুনাফার জন্য সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলো আমাদের শিশুদের উপর জাতীয় পর্যায়ে যে পরীক্ষা চালাচ্ছে সে জন্য তাদের অবশ্যই দায়ী করতে হবে আমাদের।”