জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল আটি দাশড়া উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী ইলিমা খাতুন রেসিং সাইকেল এর অভাবে বিভাগীয় সাইক্লিং প্রতিযোগিতায় অংশ করতে পারেনি। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়েছে বিভাগীয় সাইক্লিং প্রতিযোগিতা।
জানা গেছে, ক্ষেতলালের আটি দাশড়া উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ও দাশড়া মোনঝার গ্রামের কুলি শ্রমিক ইসমাইল হোসেনের মেয়ে ইলিমা খাতুন মাধ্যমিক পর্যায়ে ক্ষেতলাল উপজেলা এবং জেলায় সাইক্লিং প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে। ৮ মার্চ মঙ্গলবার রাজশাহীতে বিভাগীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার কথা ছিল। কিন্তু অর্থের অভাবে রেসিং সাইকেল কিনতে না পারায় ইলিমা খাতুন বিভাগীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি। বিভাগীয় প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহনের শর্ত ছিল নিজেস্ব রেসিং সাইকেল থাকতে হবে। হতদরিদ্র কুলি শ্রমিক পিতার পক্ষে মেয়েকে রেসিং সাইকেল কিনে দেওয়া সম্ভব হয়নি। ইতঃপূর্বে ইলিমা খাতুন উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে অন্যের সাধারণ সাইকেল ধার নিয়ে সাইক্লিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রথম স্থান অধিকার করেছিল। ওই এলাকায় কারো রেসিং সাইকেল না থাকায় ধার নেওয়াও সম্ভব হয়নি। সোমবার ৭ মার্চ ইলিমার স্বপ্নভঙ্গের আশঙ্কার বিষয়টি স্থানীয় সংবাদকর্মিরা সোস্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি প্রচার করলেও কেউ সাড়া দেননি।
এদিকে ইলিমা খাতুন কান্নাজড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, আমার বিশ্বাস ছিল বিভাগীয় পর্যায়েও প্রথম হতাম। গরিব ঘরে জন্ম নেওয়ায় আমার স্বপ্নভঙ্গ হলো। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদের নিকট গিয়েও কোন সাড়া পাইনি।
বাবা কুলি শ্রমিক ইসমাইল হোসেন তার অসহায়ত্বের কথা প্রকাশ করে বলেন, উপজেলা ও জেলা পর্যায় মেয়ের সাফল্যে গর্বিত হয়েছিলাম কিন্তু মেয়েকে রেসিং সাইকেল কিনে দেওয়ার সামর্থ্য আমার নেই বলে বিভাগীয় পর্যায় অংশগ্রহণ করা হলো না।
আটি দাশড়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, বিভাগীয় পর্যায় সাফল্য এলে সুনাম প্রতিষ্ঠানের হতো কিন্তু প্রতিযোগিকে সাইকেল কিনে বা ব্যবস্থা করে দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের নয় বলে রাগান্বিত হয়ে ফোন কেটে দেন।
ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, আমি বিষয়টি বিভাগীয় প্রতিযোগিতার দিনই জানতে পেরেছি। আগে জানতে পারলে একটা ব্যবস্থা করা যেত।