রাজশাহীর চারঘাটে আগাছা নাশক কীটনাশক প্রয়োগে ২০ জন কৃষকের প্রায় ২৭ বিঘা জমির পেঁয়াজ নষ্ট হবার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ক্ষতিপূরণের দাবিতে ও কিটনাশক ডিলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়ে স্থানীয় কৃষি অভিযোগ জানিয়েছেন কৃষকরা। কৃষি দপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত কৃষকরা এ বিষয়ে কোনো প্রতিকার পাননি।
সরেজমিন উপজেলার মুক্তারপুর ও শ্রীখন্ডী মাঠে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা পেঁয়াজ, রসুন, পেয়ারাসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ করেছেন। পেঁয়াজের আবাদ কিছু জমিতে বেশ ভাল হয়েছে। তবে কিছু জমিতে পেঁয়াজ রোপনের পরপরই জমিতে তা শুকিয়ে গেছে। পেঁয়াজ খেতগুলো খাঁ খাঁ করছে। জমি বর্গা নিয়ে ও এনজিও থেকে লোন করে পেঁয়াজ চাষ করে কৃষকরা পথে বসেছেন।
কৃষকরা জানায়, চলতি মৌসুমে জমি থেকে আমন ধান কেটে নেওয়ার পর কৃষকরা পেঁয়াজ চাষের জন্য জমি প্রস্তুত শুরু করেন। এ সময় ধানের আগাছা দমনের জন্য নাওদাড়া খুদির বটতলা বাজারের শিমুল ট্রেডার্স নামের কিটনাশক ডিলারের দোকান থেকে বায়ার কোম্পানির কাউন্সিল কীটনাশক কিনে জমিতে প্রয়োগ করেন তারা। এর নির্দিষ্ট সময় পর জমিতে পেঁয়াজ চারা রোপণ করেন। কিন্তু সেই চারা সব পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। মুক্তারপুর ও শ্রীখন্ডী বিলের প্রায় ৩০ জন কৃষকের ২৭ বিঘা জমির পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা বিষয়টি কিটনাশক ডিলারকে জানালেও কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তাদের জানান। কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পরিদর্শন করেন এবং প্রয়োগকৃত কীটনাশকগুলো দেখেন। কিন্তু এরপর কৃষকদের সাথে আর যোগাযোগ করেননি তাঁরা। এ অবস্থায় পেঁয়াজ চাষে নিজেদের সর্বোচ্চ টুকু বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে কৃষকরা পথে বসেছেন।
ম্ক্তুারপুর দফাদার পড়া গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক সালাউদ্দিন গাজী জানান, তিনি প্রায় দেড় বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছেন। এর মধ্যে এক বিঘা জমিতে ওই ডিলারের কীটনাশক প্রয়োগের পর সব পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। বাকি জমিটুকুতে অন্য ডিলারের অন্য কোম্পানির কিটনাশক ব্যবহার করে পেঁয়াজের আবাদ ভাল হয়েছে। এক বিঘা জমির পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ায় এখন মাথায় হাত পড়েছে।
একই গ্রামের মোতালেব হোসেন জানান, তিনি ২২ হাজার টাকা খরচ করে ১৭ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছেন। কিন্তু ওই কিটনাশক প্রয়োগ করে সব পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। যারা অন্য কিটনাশক ব্যবহার করেছে তাঁদের কোনো ক্ষতি হয়নি। এ অবস্থায় ক্ষতিপূরন দাবি করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই কিটনাশক ডিলার শিমুল ট্রেডার্সের মালিক শিমুল আলী বলেন, আমার দোকান থেকে ওই কৃষকরা কিটনাশক কিনেছিল। তাঁরা হয়তো সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রয়োগ করেনি। তারপরও আমি ক্ষতিগস্থ কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেবার আশ্বাস দিয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বজলুর রহমান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর পেঁয়াজ ক্ষেতগুলো পরিদর্শন করেছি। মাটি পরীক্ষা না করে কিটনাশকের সমস্যা ছিল কিনা বলা সম্ভব না। তবে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা যেনো ক্ষতিপূরণ পায় সেজন্য আমরা উদ্যেগ নিয়েছি।