এতিম, মিসকিন ও ভিক্ষুকদের জন্য ব্যতিক্রমি উদ্যোগ নিয়েছেন, রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ বাজারের উপজেলা পরিষদ ক্যান্টিনের মালিক আবদুল লতিফ সরদার। তার এমন মহৎ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন, এতিম, মিসকিনসহ সকল শ্রেনী পেশার লোকজন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভবানীগঞ্জ বাজার সংলগ্ন কাছারি কোয়ালীপাড়া গ্রামের হোটেল ব্যবসায়ী আবদুল লতিফ সরদার দীর্ঘদিন থেকে উপজেলা পরিষদের ক্যান্টিনটি ভাড়া নিয়ে হোটেল ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। উপজেলা পরিষদের মধ্যে ক্যান্টিনটি অবস্থিত হওয়ায় প্রতিদিন বেচাকিনাও ভাল হয়। বেশ কয়েকজন কর্মচারী নিয়ে হোটেল চালান আবদুল লতিফ। দোকানে খরিদ্দারের সংখ্যাও অনেক বেশী। কোন কোন সময় হোটেলে অনেক ভীড় হয়। খরিদ্দারের জায়গা দিতে হিমসিম খায় হোটেল কর্তৃপক্ষ। এমন সময় হোটেলে এতিম, মিসকিন ও ভিক্ষুকরাও করে একমুঠো ভাতের আশায়। অনেক সময় না খেয়ে অনেক ফকির, মিসকিন বিদায় নেয়। কষ্ট পান হোটেল মালিক আবদুল লতিফ। তিনি অসহায় মানুষের কষ্ট বুঝে শুক্রবার দুপুর থেকেই তাদের জন্য আলাদা বসার ব্যবস্থা করেন।
বসার ব্যবস্থার পাশাপাশি তিনি বিনা পয়সায় খাবার দেন ওই সকল, এতিম, মিসকিন ও ভিক্ষুকদের। আবদুল লতিফের এমন কর্মকা-ে সাধুবাদ জানান এলাকার সাধারন মানুষ। দুপুরে এমন দৃশ্যই দেখা গেছে হোটেলটিতে। কথা হয় কয়েকজন, ভিক্ষুকের সাথে। আবদুল কাদের, মোজাম্মেল হক, কুলসুম বিবি, সাহেরা বেওয়া, সন্ধ্যারানীসহ বেশ কয়েক ভিক্ষুক জানান, দীর্ঘদিন থেকে হোটেল মালিক আবদুল লতিফ আমাদেরকে বিনা পয়সায় দুপুরের খাবার বিতরণ করে আসছেন। আমরা সবাই আবদুল লতিফের জন্য মহান আল্লাহুর দরবারে অনেক দোয়া করি। এছাড়াও তার পরিবারসহ সকলের জন্য দোয়া করি।
কর্মচারী শাহিনুর আলম জানান, মালিক আবদুল লতিফের নির্দেশে অসহায়,্এতিম,ভিক্ষুকসহ বিভিন্ন গরীব লোকদের বিনা পয়সায় খাবার দিয়ে থাকেন। প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ জনকে বিনা পয়সায় খাবার দিলেও শুক্রবার ও সোমবার (হাটবার) শতাধিক ভিক্ষুকদের খাবার দিতে হয়। যার কারণে তাদের জন্য বাহিরে আলাদা ভাবে চেয়ার টেবিল ফেলে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনিও হোটেল মালিক আবদুল লতিফের মহত্বের বিষয় গুলো তুলে ধরেন। আবদুল লতিফের মহৎ কর্মকান্ডের জন্য তিনি একজন হৃদয়বান মানুষ হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন সকলের কাছে। এ প্রসঙ্গে মঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে হোটেল মালিক আবদুল লতিফ জানান, গরিব অসহায় ভিক্ষুকদের খাওয়ানোর পিছনে আমার অন্য কোন উদ্দেশ্য নেই। আমি একসময় অন্যের হোটেল কাজ করেছি। পরে ফুটপাতে দোকান দিয়েছি। আল্লাহর রহমত ও মানুষের দোয়া ভালোবাসায় আমি আজকের অবস্থানে আসতে পেরেছি। নিজের অতীত কষ্টের জীবন মনে করেই আজ সাধ্যমত গবীব অসহায় ও ভিক্ষুকদের একবেলা খাবারের ব্যবস্থা করেছি।